ছোটবেলায় আমরা ইংরেজিতে কয়েকটা ছড়া পড়েছি। Baa Baa Black Sheep এর মধ্যে অন্যতম। এই ছাড়াটি আমরা যতটা সরল সহজ মনে করি আসলে তা না, এর পিছনে একটি কঠিন নির্মম ইতিহাস লুকিয়ে আছে ।
এই ছড়ার উৎপত্তি ১৮শ শতাব্দীর ব্রিটেনে, যেখানে এটি একটি সাদামাটা ছড়া হলেও মধ্যযুগীয় ইংল্যান্ডের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি ও রাজস্ব নীতির উপর নির্ভরশীল ছিল।
এই ছড়ার পেছনের গল্পটি আসলে ১৩শ শতাব্দীর ইংল্যান্ডের উল করের উপর ভিত্তি করে তৈরি। রাজা এডওয়ার্ড প্রথমের শাসনামলে, উলের উপর নতুন কর আরোপ করা হয়েছিল। এই করের একটি অংশ রাজা নিজে নিতেন, একটি অংশ যেতো গির্জায় এবং বাকি অংশ থাকতো কৃষকের জন্য। ছড়ার মধ্যকার ‘মাস্টার’ এবং ‘ডেম’ মূলত তৎকালীন ইংল্যান্ডের অভিজাত শ্রেণীকে নির্দেশ করে, যারা এই উল করের একটি অংশ দাবি করতেন।
তবে, ১৯৮০ এবং ১৯৯০-এর দশকে ছড়াটি নতুনভাবে আলোচনায় আসে। যুক্তরাজ্যের কিছু অভিভাবক অভিযোগ তোলেন যে, এই ছড়াটি মূলত দাসপ্রথার ইঙ্গিত বহন করছে। তাদের মতে, ‘কালো ভেড়া’ আসলে আফ্রিকান দাসদের প্রতীক, আর উল তাদেরকে জমিতে কাজ করার জন্য বাধ্য করার ইঙ্গিত দেয়।
যদিও এই অভিযোগের পেছনে কোনও শক্ত প্রমাণ ছিল না, তবে এর ফলে যুক্তরাজ্যে কিছু এলাকায় ছড়াটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এমনকি, একটি বিদ্যালয় এলাকায় ছড়াটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে খবরও ছড়ায়। যদিও পরবর্তীতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, কোনও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি, বরং ছাত্রদের জন্য জাতিগত সংবেদনশীলতা বিষয়ক পাঠক্রম চালু করা হয়েছে।
এই বিতর্কটি শুধু যুক্তরাজ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। অস্ট্রেলিয়ার একটি বিদ্যালয় অঞ্চলেও ছড়াটির পরিবর্তিত সংস্করণ চালু করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেখানে কালো ভেড়ার পরিবর্তে 'রেইনবো শীপ' বা রঙিন ভেড়ার কথা বলা হয়েছিল।
তবে, বেশিরভাগ গবেষক বিশ্বাস করেন যে ‘Baa Baa Black Sheep’ দাসপ্রথার সাথে সম্পর্কিত নয়। বরং, এটি মধ্যযুগীয় ইংল্যান্ডের কর ব্যবস্থা এবং উল বাণিজ্যের সাথে সম্পর্কিত।