সুকুমার রায়ের লেখা ‘হ য ব র ল’ বাংলা সাহিত্যের একটি অনন্য রচনা হিসেবে স্বীকৃত। এটি ননসেন্স ধারার অন্যতম শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই রচনার মাধ্যমে সুকুমার রায় আমাদের সামনে এমন একটি জগৎ তুলে ধরেন যেখানে বাস্তবতা এবং কল্পনার সীমানা পুরোপুরি মুছে যায়।
গল্পের শুরু হয় একটি বাচ্চা ছেলের ঘুম থেকে জাগার মধ্যে দিয়ে। সে ঘাম মোছার জন্য রুমাল তুলতে গিয়ে দেখে তার রুমালটি একটি বেড়ালে পরিণত হয়েছে। এরপর সে বেড়ালটির সাথে কথা বলা শুরু করে এবং বুঝতে পারে যে, বেড়ালটি উল্টোপাল্টা কথা বলছে। এরপর গল্পের ঘটনাপ্রবাহে একের পর এক উদ্ভট চরিত্রের আবির্ভাব ঘটে। কাকেশ্বর, উদো-বুদো, হিজিবিজবিজ, ব্যাকরণ শিং, নেড়া, সজারু, প্যাঁচা—সবাই মিলে তৈরি করে এক অসম্ভব বিশৃঙ্খলা।
‘হ য ব র ল’-এর শৈল্পিক সৌন্দর্য ও তাৎপর্য বোঝাতে অনেকেই একে লুইস ক্যারলের ‘এলিস ইন দ্য ওয়ান্ডারল্যান্ড’-এর সাথে তুলনা করেন। যদিও দুটি রচনা সুর ও স্বভাবে এবং সাংস্কৃতিক পটভূমিতে সম্পূর্ণ ভিন্ন, তবুও উভয়ের মধ্যে একটি কাল্পনিক ও ননসেন্স ধারার মিল রয়েছে।
সুকুমার রায়ের এই রচনায় যেমন রয়েছে বিদ্রূপ, তেমনি রয়েছে এক গভীর কৌতুকপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি, যা শুধুমাত্র শিশুদেরই নয়, বড়দের মনকেও আকর্ষণ করে। এই রচনা বাংলা সাহিত্যের একটি অমূল্য রত্ন, যা আজও পাঠকদের কল্পনার জগতে ভাসিয়ে নিয়ে যায়।