চিংড়ি আমাদের খাদ্যতালিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও, অনেকেই অবগত নন যে এটি প্রকৃতপক্ষে মাছের অন্তর্গত নয়। এটি বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক বৈশিষ্ট্যের কারণে মাছ থেকে আলাদা। আসুন জেনে নিই কেন চিংড়ি মাছের শ্রেণীর অন্তর্গত নয়।
চিংড়ি ও মাছের পার্থক্য
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিভাগ:
- মাছ এবং চিংড়ি দুটিই জলজ প্রাণী হলেও তাদের বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিভাগ আলাদা। মাছদের বৈজ্ঞানিক শ্রেণী হলো 'Pisces', যা অন্তর্ভুক্ত করে মাছের সমস্ত প্রজাতি। চিংড়ি একটি ক্রাস্টেসিয়ান, যার বৈজ্ঞানিক শ্রেণী হলো 'Crustacea', যা অন্তর্ভুক্ত করে বিভিন্ন শামুক, কাঁকড়া এবং চিংড়ি।
অঙ্গসংস্থান:
মাছের শরীর গাঢ় ত্বক ও কশেরুকাযুক্ত হাড়ের গঠন দ্বারা নির্ধারিত হয়, যার গায়ে সাধারণত কাটা বা স্কেল থাকে। চিংড়ির শরীরের বাহ্যিক কাঠামো একটি কঠিন শেলের দ্বারা সুরক্ষিত থাকে, যা 'exoskeleton' নামে পরিচিত।
শ্বাসপ্রশ্বাসের পদ্ধতি:
মাছ জল থেকে অক্সিজেন শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য গills ব্যবহার করে। অন্যদিকে, চিংড়ি অক্সিজেন শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য ব্রাঞ্চিওপডস নামক শ্বাসযন্ত্র ব্যবহার করে।
পদার্থবিজ্ঞান ও দেহগত গঠন:
মাছের দেহ সাধারণত একক অংশে বিভক্ত থাকে—শিরদাঁড়ার অংশ, পেটের অংশ, এবং মাথার অংশ। চিংড়ির দেহ তিনটি প্রধান অংশে বিভক্ত—মাথা, বুক এবং পেট, এবং এটি একাধিক পায়ে চলাচল করে।
চিংড়ির বৈশিষ্ট্য:
শ্রেণী: চিংড়ি 'Crustacea' পরিবারের অন্তর্গত এবং কাঁকড়া, শামুকের সাথে সম্পর্কিত।
বহিরাগত খোলস: চিংড়ির দেহ এক ধরনের শক্ত খোলস দ্বারা সুরক্ষিত থাকে, যা মাছের ত্বক থেকে আলাদা।
অন্যান্য বৈশিষ্ট্য: চিংড়ির দীর্ঘ পা এবং বিশেষ ধরনের শ্বাসযন্ত্র মাছ থেকে পার্থক্য সৃষ্টি করে।
চিংড়ি ও মাছের মধ্যে বৈজ্ঞানিক ও শারীরিক পার্থক্য স্পষ্ট। মাছের মতো শ্বাসপ্রশ্বাস, দেহগঠন এবং শ্রেণীভেদে চিংড়ি একটি আলাদা প্রাণী। এদের বৈজ্ঞানিক শ্রেণী এবং শারীরিক বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য তাদের আলাদা প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত করে। এই বৈশিষ্ট্যগুলি বোঝা আমাদের জলজ প্রাণীদের সম্পর্কে গভীর ধারণা প্রদান করে।