সংকেতের মাধ্যমে গোপন বার্তালাপ

Comments · 175 Views

অন্তরঙ্গ সংকেত: মর্স কোডের জাদু

মর্স কোড একটি সাংকেতিক ভাষা যা চিঠি ও সংখ্যা সংকেত হিসেবে বিন্দু ও ড্যাশ ব্যবহার করে তৈরি হয়। এই কোডটি সেমাফোর ও টেলিগ্রাফের মতো কমিউনিকেশন টেকনোলজিতে ব্যবহৃত হয়েছিল। মর্স কোডের প্রতি চিঠি বা সংখ্যার জন্য নির্দিষ্ট বিন্দু (ডট) এবং ড্যাশ (ড্যাশ) ব্যবহার করা হয়, যা সংকেত প্রেরণ ও গ্রহণে সহায়ক ছিল। উদাহরণস্বরূপ, "এ" চিঠির কোড হল ".-" এবং "বিএ" চিঠির কোড হল "-..."।

 

মর্স কোডের কিছু জনপ্রিয় উদাহরণ হলো "SOS" সংকেত, যা আন্তর্জাতিক সংকেত হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং এটি "-••• --- •••" হিসাবে নির্দেশিত হয়। এছাড়া, "হ্যালো" শব্দের মর্স কোড হচ্ছে ".... .- .-.. .-.. ---"। প্রতিটি সংকেত একটি বিশেষ বার্তা প্রেরণ করে যা সংকেতপ্রাপ্তরা সহজে বুঝতে পারে।

 

মর্স কোডের ব্যবহার ইতিহাসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৮৩০-এর দশকে স্যামুয়েল মর্স এবং আলফ্রেড ভেইল মর্স কোডের উন্নয়ন করেছিলেন, যা টেলিগ্রাফের মাধ্যমে দীর্ঘ দূরত্বের যোগাযোগ সহজ করে তুলেছিল। এটি প্রথমে বাণিজ্যিক টেলিগ্রাফে এবং পরে সামরিক এবং জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মর্স কোডের মাধ্যমে জরুরি বার্তা প্রেরণ করা হয়েছিল।

 

বর্তমান যুগে মর্স কোডের ব্যবহার অনেক কমে গেছে, তবে এটি এখনও কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে ব্যবহৃত হয়। সাম্প্রতিক কালে, ২০২৪ সালের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে, মর্স কোডের ব্যবহার দেখা গেছে। যখন আন্দোলনের নেতাদের গ্রেফতার করা হয়, তারা সংকেত প্রেরণের জন্য মর্স কোডের ব্যবহার করেন, যা তাদের বার্তাগুলি নিরাপদে এবং গোপনে প্রেরণ করতে সাহায্য করেছিল। এই ঘটনা মর্স কোডের ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং তার প্রতি সাম্প্রতিক প্রাসঙ্গিকতা পুনর্বহাল করে।

 

মর্স কোডের ইতিহাস ও ব্যবহার আমাদেরকে দেখায় যে, সংকেত প্রেরণ ও যোগাযোগের প্রযুক্তি কীভাবে সময়ের সাথে বিবর্তিত হয়েছে। যদিও আধুনিক প্রযুক্তি এখন অনেক বেশি উন্নত, মর্স কোডের ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও ব্যবহার বিশেষ পরিস্থিতিতে এখনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

Comments
Read more