কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই

কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই

Bangla Blog

টপ নিউজ

 

কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই

বাংলাব্লগ.ইন নিজস্ব প্রতিবেদন · December 6, 2023

 

FacebookTwitterShare

ভারত বিখ্যাত গানের কথাশিল্পী গৌরী প্রসন্ন মজুমদার আজও আছেন সমগ্র বাঙালির হৃদয়ে। বাংলার আধুনিক ও চলচ্চিত্র সংগীতের বিশিষ্ট গীতিকার ও সুরকার গৌরী প্রসন্ন মজুমদার জন্মগ্রহণ করেন অধুনা বাংলাদেশের পাবনা জেলার ফরিদপুরের গোপালনগর গ্রামে। ১৯২৫ সালের 5 ই ডিসেম্বর তাঁর জন্ম হয়। পিতা ছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের স্বনামধন্য অধ্যাপক উদ্ভিদবিদ গিরিজা প্রসন্ন মজুমদার। মা সুধা মজুমদার।

 

গৌরী প্রসন্ন ছাত্র জীবনে কালিদাসের মেঘদূতম্ ইংরেজিতে অনুবাদ করেন। বাংলা ও ইংরেজি দুটি বিষয়ে তিনি এম.এ পাস করেছিলেন। ছাত্রাবস্থায় গৌরী প্রসন্ন তাঁর লেখা একটা গান নিয়ে সোজা চলে যান শচীন দেব বর্মনের কাছে। শচীনকর্তা একটা ইংরেজি বই এনে তার থেকে একটা লাইন তুলে, সেই লাইনটা মাথায় রেখে গৌরী প্রসন্নকে গান লিখতে বললেন। গানটা লিখলেন গৌরী প্রসন্ন এবং শচীন কর্তার পছন্দ হলো। শচীন দেব বর্মনের নির্দেশ অনুযায়ী আকাশবাণীতে গানটি দিয়ে এলেন। শুরু হল বাংলা সুরের জগতে তাঁর যাত্রা। শচীন দেব বর্মনের হাত ধরে তাঁর সুরে গৌরী প্রসন্ন মজুমদারের কথায় সৃষ্টি হল কালজয়ী সমস্ত গান যেমন ‘মেঘ কালো আঁধার কালো’,’ প্রেম একবারই এসেছিল নীরবে’, ‘বাঁশি শুনে আর কাজ নাই’ ।

 

বাংলা গানের ভান্ডার সমৃদ্ধ হল ওনার লেখা গানে। কলেজ জীবনের বন্ধু বিখ্যাত সুরকার নচিকেতা ঘোষের সঙ্গে গোলবাড়িতে বসে পরোটা আর কষা মাংস খেতে খেতে লিখেছিলেন ‘আমার গানের স্বরলিপি লেখা রবে’ – গেয়েছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায় নচিকেতা ঘোষের সুরে।

‘না না না আজ রাতে আর যাত্রা শুনতে যাব না’

‘ও নদীরে একটি কথা শুধাই শুধু তোমারে’

‘নীল আকাশের নীচে এই পৃথিবী’

‘আজ দুজনার দুটি পথ’

‘এই মোম জোছনায় অঙ্গ ভিজিয়ে এসো না গল্প করি’, ‘মুছে যাওয়া দিনগুলি আমায় যে পিছু ডাকে’

‘এই রাত তোমার আমার’

‘কেন দূরে থাকো’ ইত্যাদি বহু বিখ্যাত কালজয়ী গানের স্রষ্টা ছিলেন অদ্বিতীয় গৌরী প্রসন্ন মজুমদার।শুধু গীতিকার নয়, ‘দেয়া নেয়া’, ‘সূর্যতোরণ’, ‘সূর্যতপা’, ‘শুধু একটি বছর’ এই সমস্ত ছবির কাহিনিকার ছিলেন গৌরীপ্রসন্ন।

 

বাংলা সংগীতের এই ধ্রুবতারা যার অবদান রয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে। 1971 সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় একটি চায়ের দোকানে আড্ডায় বসে আকাশবাণীতে মুজিবরের বক্তৃতা শুনে লিখেছিলেন ‘শোন, একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ্য মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি- প্রতিধ্বনি, আকাশে বাতাসে ওঠে রনি’। বঙ্গবন্ধুর আমন্ত্রণে বাংলাদেশে এসে বাংলাদেশ বেতারের জন্য তিনি লিখেছিলেন ‘মাগো ভাবনা কেন’- তাঁর রচিত এই স্বদেশী গান আজও মানুষকে উজ্জীবিত করে। ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৯৮৬ সালের ২৫শে জুন বোম্বেতে যান চিকিৎসার জন্য। হাসপাতালে শুয়ে তাঁর লেখা শেষ গান ‘এবার তাহলে আমি যাই সুখে থাক, ভালো থাক মন থেকে এই চাই’। 20শে আগস্ট ৬২ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যুতে শেষ হল বাংলা গানের এক স্বর্ণালী অধ্যায়। কিন্তু কানে বাজে ‘অনুভবে তোমারে যে পাই’।


Prince Rot Hajong

30 Blog posts

Comments