প্রকৃতি আমাদের চারপাশের বিচিত্র রূপে বিরাজমান। কখনো সে শান্ত কখনো প্রখর। প্রাকৃতিক দুর্যোগ গুলোর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি হিসেবে পরিচিত। ঘূর্ণিঝড় এক ধরনের তীব্র বায়ুচাপের পরিবর্তন জনিত ঝড় যা সমুদ্রের উপর সৃষ্টি হয়ে স্থলে আঘাত হানে এবং প্রচন্ড ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।
ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি ও কারণ:
ঘূর্ণিঝড় সাধারণত গ্রীষ্ম মন্ডলী ও অঞ্চলে সৃষ্টি হয়। সমুদ্রের তাপমাত্রা 26.5 ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি হতে পারে। সমুদ্রের গরম জল বাষ্প পরিণত হয়ে উপরে উঠে যায় যা বায়ুমন্ডলে নিম্নচাপ সৃষ্টি করে। এই নিম্নচাপ অঞ্চলের চারপাশের উচ্চচাপ যুক্ত প্রভাবিত হয়ে আসে এবং ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি করে। এভাবে ধীরে ধীরে একটি ঘূর্ণিঝড়ে জন্ম হয়।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব:
ঘূর্ণিঝড় এর প্রভাব অন্তত ভয়াবহ। এটি স্থলে আঘাত হানার সময় সঙ্গে করে নিয়ে আসে প্রচন্ড বায়ু ভারী বর্ষণ এক জলোচ্ছ্বাস। এর ফলে গাছপালা উড়ে যায় ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ে এবং রাস্তাঘাট তছনছ হয়ে যায়। প্রচুর মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে এবং অনেক সময় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। সমুদ্রের উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে জলোচ্ছ্বাসের কারণে বন্যা দেখা দেয় যা ফসলে জমির মাছের খামার এবং অবকাঠামোর ক্ষতি করে থাকে।
পূর্বাভাস ও প্রতিরোধ:
আধুনিক যুগে প্রযুক্তির উন্নতির ফলে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বভাস দেওয়া সম্ভব হয়েছে। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বায়ুমন্ডলের গতিবেদি পর্যবেক্ষণ করে ঘূর্ণিঝড়ের আগমনের সময় ও স্থান নির্ধারণ করা যায়। এর ফলে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে। এছাড়া উপকূলবর্তী এলাকায় মজবুত বাঁধ নির্মাণ সাইক্লোন সেল্টার স্থাপন ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরী।