দেশের পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ১১ জেলায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির মধ্যেই রাঙ্গামাটির কাপ্তাই বাঁধ খুলে দিয়ে হ্রদ থেকে পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র। আজ শনিবার (২৪ আগস্ট) বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের এক জরুরি বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী) এ টি এম আব্দুজ্জাহের স্বাক্ষরিত জরুরি বার্তায় বলা হয়, কাপ্তাই লেকের পানির উচ্চতা আজ বিকেল ৩টায় ১০৭ দশমিক ৬৬ ফুট এমএসএল, যা বিপৎসীমার কাছাকাছি হওয়ায় লেকের উজান ও ভাটি এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণে আজ রাত ১০টায় স্পিলওয়ের ১৬টি গেট ছয় ইঞ্চি পরিমাণ উঠিয়ে পানি নিষ্কাশন শুরু করা হবে। এতে নয় হাজার সিএফএস পানি নিষ্কাশিত হবে।
এতে আরও জানানো হয়, বর্তমানে লেকের ইনফ্লো ও বৃষ্টিপাত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইনফ্লো বেশি হলে, অর্থাৎ পানির লেভেল অস্বাভাবিক বাড়লে স্পিলওয়ে গেট খোলার পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে। বর্তমানে পাঁচটি ইউনিটের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে, যার ফলে ৩২ হাজার সিএফএস পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে।
কাপ্তাই বাঁধে পানি যদি আর এক ইঞ্চি বৃদ্ধি পায় তবে ছয় ইঞ্চি গেট খোলা হবে। যা প্রতি বর্ষায় স্বাভাবিকভাবেই হয়ে আসছে। আর এই পানি কর্ণফুলী নদী হয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়বে।
কাপ্তাই হ্রদের পানি ধারণ ক্ষমতা সাধারণত ১০৯ ফুট। বর্তমানে পানির উচ্চতা প্রায় ১০৭. ৬৬ ফুট। ফলে বিপৎসীমার কাছাকাছি হওয়ায় হ্রদের উজান ও ভাটির বন্যা নিয়ন্ত্রণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের।
ব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, একইসময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত পাঁচটি ইউনিটের মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার সিএফএস পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে। যার মাধ্যমে প্রায় ২১৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
পানি ছাড়ার আগেই ‘জরুরি বার্তা’হিসেবে বরাবরের মতই বিষয়টি অবহিত করে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, নৌবাহিনীর কাপ্তাই ও চট্টগ্রাম ঘাঁটি এবং রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে শনিবার দুপুর তিনটায় চিঠি দিয়েছে কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।