কন্যা সন্তান হলে কি আজান শুনানোর দরকার নেই?

প্রায়ই লক্ষ্য করা যায় যে, অনেকে বাচ্চা ছেলে হলেই কানে আযান ও ইকামত দেয়, কিন্তু মেয়ে শিশুর ক্ষেত্রে তা করে ন?

নিয়ম হলো, সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে, জন্মের পর আযান ডান কানে এবং ইকামত বাম কানে দিতে হবে। তবে প্রায়ই লক্ষ্য করা যায় যে, অনেকে বাচ্চা ছেলে হলেই কানে আযান ও ইকামত দেয়, কিন্তু মেয়ে শিশুর ক্ষেত্রে তা করে না, অথবা তারা শুধু আযান দেয়, ইকামত দেয় না। এই ধরনের বৈষম্যমূলক চিন্তাভাবনা ও কাজ ইসলামী শরীয়ত দ্বারা অনুমোদিত নয়। এ ক্ষেত্রে ছেলে শিশু ও মেয়ে শিশুর মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তদুপরি, অনেকে এই অনুশীলনটিকে সম্পূর্ণরূপে অবহেলা করে, যা অনুপযুক্তও। মেয়ে শিশুর ক্ষেত্রে আযান ও ইকামত না দেওয়া পরোক্ষভাবে এক ধরনের বিরক্তি প্রকাশ করে।

এটা খুবই গুরুতর বিষয়। এই ধরনের চিন্তা জাহিলী যুগের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যখন কন্যা সন্তান হওয়াকে একটি বড় লজ্জা বলে মনে করা হত। তাদের অবস্থা তুলে ধরে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, “আর যখন তাদের একজনকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেওয়া হয়, তখন তার মুখ কালো হয়ে যায় এবং সে অসহনীয় দুঃখে ভুগতে থাকে। তিনি লোকদের কাছ থেকে মুখ লুকান, তিনি যে সুসংবাদ শুনেছিলেন তাতে দুঃখিত। সে ভেবেছিল, অপমান সহ্য করে তাকে রাখবে, নয়তো মাটির নিচে পুঁতে দেবে। শোন, তাদের বিচার খুবই খারাপ।" - (সূরা নাহল 58-59)। অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, "এবং যখন মেয়েটিকে [যাকে] জীবন্ত কবর দেওয়া হয়েছিল, তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, কী পাপে তাকে হত্যা করা হয়েছিল।" - (সূরা ইনফিতার 8-9)

এটি ছিল প্রাক-ইসলামী জাহিলী যুগের চিত্র। কিন্তু বর্তমান সময়ে শিক্ষা, সভ্যতা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষের যুগে এখনও মেয়ে শিশুর জন্ম হলে মানুষ কেন এমন আচরণ করবে?কোনো মায়েরই তার সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণের ক্ষমতা নেই। এ ব্যাপারে পূর্ণ কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা কন্যা এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র দান করেন। অতএব, যদি কোন হতভাগ্য ব্যক্তি কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য কোন নারীকে নির্যাতন করে বা কন্যা সন্তানের যত্নে অবহেলা করে তবে তারা অবশ্যই আল্লাহর কাছে অপরাধী হয়ে উঠবে।


Abu Hasan Bappi

414 Blog posts

Comments