বর্ষার পরেই শরতের আগমন। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহের পর বর্ষাকে প্রথম প্রথম প্রিয়জন মনে হলেও এর দীর্ঘ অবস্থান আর একরোখা আধিপত্যের কারণে শেষ পর্যন্ত আর মোটেই ভালো লাগে না।
নির্ধারিত সময়কালে আষাঢ় শ্রাবণ শেষ হওয়ার পরও যেন বর্ষার ফিরে যাওয়ার নামগন্ধ নেই। এজন্যই বর্ষার একঘেয়ে যন্ত্রণার পর শরতের আগমনে অনেকটা স্বর্গ সুখ অনুভূত হয়।
যেন মানবসমাজের জন্য নতুন আশার সংবাদ নিয়ে শরতের আগমন ঘটে। ভাদ্র-আশ্বিন দু মাস শরৎকাল। ভাদ্রে তার আগমন, আশ্বিনে তার ঐশ্বর্যের প্রকাশ, আর কার্তিকের সূচনায় তার অন্তর্ধান।
শরৎ বাংলাদেশকে উৎসবের আনন্দে হাসিয়ে এবং বিসর্জনের বেদনায় কাঁদিয়ে বিদায় গ্রহণ করে। তার চলার পথে পড়ে থাকে বিষণ্ণ ঝরা কাঁশের গুচ্ছ, ছিন্ন ম্লান শেফালির মালা, আর নবীন ধানের অজস্র মঞ্জুরী।
শিশিরাশ্রুপূর্ণ চোখে বাংলাদেশ তার বিদায় পথের দিকে করুণ বিষণ্ণ হৃদয়ে চেয়ে থাকে। বর্ষা বাঙালির প্রিয় ঋতু, শরৎ বাংলাদেশের হৃদয়ের ঋতু। বর্ষা তার স্বাচ্ছন্দ্যের করিগর, আর শরৎ তার আনন্দের অগ্রদূত। তাই শরতের প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশের হৃদয়ের মণিকোঠায়।