শশীলজের ভেনাসের ভাস্কর্য ভাঙ্গায় ক্ষোভে ফুঁসছে সাংস্কৃতিক কর্মীরা

ময়মনসিংহের ঐতিহ্য জমিদার বাড়ির শশীলজের ফোয়ারার মাঝখানে থাকা নারী ভাস্কর্য তথা ভেনাসের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা

শশীলজ জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন জানান, একদল দুর্বৃত্ত হামলা চালিয়ে ভাস্কর্যটি ভাঙচুর করে। এ সময় তারা ভাস্কর্যের মাথার অংশটি নিয়ে যায়। এটি অমূল্য সম্পদ ছিল। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।

সাংস্কৃতিক কর্মী আসলাম জানান, জমিদার বাড়ি শশীলজের নারী ভাস্কর্যটি ছিল ময়মনসিংহের শিল্প ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ঐতিহ্য। এটি ভাঙচুরের মাধ্যমে সংস্কৃতিজনদের মনে আঘাত করেছে। ভাঙচুরের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দ্রুতই আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান তিনি।

ময়মনসিংহ বিভাগীয় চারু শিল্পী পর্ষদের সভাপতি মো. রাজন জানান, প্রাচীন ঐতিহ্যের এই ভাস্কর্যটি ময়মনসিংহ তথা সারা দেশের শোভা। এর আগেও একাধিকবার নারী ভাস্কর্যটি ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এবার উগ্রপন্থি দুষ্কৃতিকারীরা অমূল্য সম্পদ ভাস্কর্যটি ভাঙার সুযোগ পেয়েছে। এমন জঘন্য কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

ভাস্কর্যটি ভাঙা হচ্ছেভাস্কর্যটি ভাঙা হচ্ছে

 

ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট এএইচএম খালেকুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সুযোগ সন্ধানী দুর্বৃত্তরা ভাস্কর্যটি ভাঙার মাধ্যমে কলঙ্ক অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এর মাধ্যমে ময়মনসিংহ তথা সারা দেশের সংস্কৃতিজনদের মনে আঘাত দিয়েছে। যারা এই ভাস্কর্য ভাঙ্গার দুঃসাহস করেছে তাদের দ্রুতই আইনের আওতায় এনে বিচার করার দাবি জানান তিনি।

শশীলজ ময়মনসিংহ নগরীর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত জমিদার মহারাজা শশীকান্ত আচার্যের বাড়ি। এটি ময়মনসিংহ রাজবাড়ি নামে পরিচিত। ১৯০৫ সালে শশীলজ নির্মিত হয়। ২০১৫ সালে ৪ এপ্রিল জাদুঘর স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর শশীলজটি অধিগ্রহণ করার পর জাদুঘর হিসেবে এটি ব্যবহৃত হচ্ছিল।

পুরো বাড়িটি ৯ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। মূল বাড়িটি নির্মাণ করেন মুক্তাগাছার মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্য। পরে তার দত্তক ছেলে শশীকান্ত প্রাসাদটি পুনর্নিমাণ করেন। কারণ, সূর্যকান্তের নির্মিত প্রাসাদটি ভূমিকম্পে আংশিক বা পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছিল। শশীলজের মূল ভবনের সামনে আছে বাগান। সেই বাগানের ফোয়ারায় ছিল ভেনাসের ভাস্কর্য।

 

Md Ashaduzzaman

67 Blog posts

Comments