পার্ক

পার্কে বিভিন্ন বনভোজন এবং বিনোদনের জন্য মানুষ যায়।

পার্ক সাধারণত প্রাকৃতিক অথবা প্রায়-প্রাকৃতিক অবস্থায় রক্ষিত একটি সংরক্ষিত অঞ্চল। এর বাইরেও কোন কোন ক্ষেত্রে কৃত্রিম উপায়েও পার্ক তৈরি করা হয়।

 

 পার্ক হিসেবে চিহ্নিত করার পর অনেক সময় পার্কে বিভিন্ন প্রকার গাছপালা রোপণ করা হয়। পার্কে ঘাস আচ্ছাদিত অঞ্চলের সাথে শিলাময় অঞ্চল, জলাশয় এবং জীবন্ত মাছ ও উদ্ভিদ সংরক্ষণের জন্য নির্মিত কৃত্রিম জলাধার বা অ্যাকুরিয়াম (Aqurium)সহ বিভিন্ন প্রাণীর জন্য নির্দিষ্ট স্থান থাকতে পারে।

 

বিভিন্ন খেলাধুলা এবং বনভোজন অনুষ্ঠান করার জন্য পার্কের ঘাস যন্ত্র দিয়ে কেটে রাখা হয়। পার্কের নামকরণ সাধারণত কোনো একটি অঞ্চলের নামে অথবা কোনো বিশিষ্ট ব্যক্তির নামে করা হয়।

 

পৃথিবীতে বিভিন্ন প্রকার পার্ক এবং সংরক্ষিত এলাকা আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোজাতীয় পার্ক (National Park) বলতে সাধারণত স্থানীয় ও দেশীয় প্রাণী এবং উদ্ভিদের জন্য সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত অক্ষত প্রাকৃতিক ভূমিকে (Landscape) বোঝায়।

 

এ রকম পার্কগুলিতে উদ্ভিদ ও প্রাণী সংরক্ষণ (Conservation) এবং জনসাধারণের বিনোদনের জন্য সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়। পৃথিবীর সব চাইতে বড় জাতীয় পার্ক হচ্ছে ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত নর্থ-ইস্ট গ্রিনল্যান্ড জাতীয় পার্ক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইয়োসোসাইট জাতীয় পার্ক নিউইয়র্ক শহরের ম্যানহাটন-এ অবস্থতি সেন্ট্রাল পার্ক দুইটি সুপরিচিত জাতীয় পার্ক।

 

এছাড়া ১৯৭৬ সালে স্থাপিত নেপালের সাগরমাথা ন্যাশনাল পার্ক একটি অনন্য জাতীয় পার্ক। ১১৪৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই পার্কটির চারটি সংরক্ষিত পরিবেশ অঞ্চল নিম্নতরাই বন অঞ্চল (Lower Terai Forest Zone), অ্যালপাইন স্ক্রাফ অঞ্চল (Alpine Scruff Zone), গিরিশৃঙ্গ বা অ্যালপাইন অঞ্চল (Alpine Zone) এবং তুষাররাকৃত অঞ্চল (Arctic Zone) জুড়ে ১১৮ জাতীয় দুর্লভ উদ্ভিদ ও পাখি, কস্ত্তরী হরিণ, বন্য গরু, বরফ চিতাবাঘ, উল্লুক, লালপান্ডা এবং অন্যান্য অনেক প্রাণী আছে।

 

বাংলাদেশে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার ১৭২৯ হেক্টর বনভূমি সংরক্ষিত করে ১৯৮০ সালে সর্বপ্রথম জাতীয় উদ্যান হিসেবে গড়ে তোলা হয়। পরবর্তীকালে টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলার সংরক্ষিত মধুপুর জাতীয় উদ্যান, গাজীপুর জেলার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, হবিগঞ্জ জেলার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, মৌলভীবাজার জেলার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এবং নোয়াখালীর নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যানসহ মোট ১৫টি জাতীয় উদ্যান গড়ে তোলা হয়েছে।

 

ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান ঢাকা মহানগরী থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে গাজীপুর জেলার অন্তর্গত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। ১৯৭৪ সালে এটি মোট ১২ হাজার ৪০৪ একর চালা (উঁচু ভূমি) ও বাইদ (নিচু ভূমি) নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ উদ্যানের প্রধান উদ্ভিদ প্রজাতি হলো ‘শাল’ (shorea robusta)।

 

ঢাকা মহানগরী থেকে ১২৫ কিলোমিটার উত্তরে টাঙ্গাইল জেলাস্থ ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। এটা টাঙ্গাইল বন বিভাগের আওতাভুক্ত। ২০ হাজার ৮৩৭ একর আয়তন জুড়ে বিস্তৃত শাল বনভূমির এ উদ্যান ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

 

এতে ১৭৬ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে, যার মধ্যে আছে ৭৩ প্রজাতির বৃক্ষ, ২২ প্রজাতির গুল্ম, ১ প্রজাতির পামগাছ, ৮ প্রজাতির ঘাস, ২৭ প্রজাতির ক্লাইম্বার ও ৪৫ প্রজাতির ঔষধি উদ্ভিদ। এর বাইরেও কিছু বিদেশি প্রজাতির উদ্ভিদ উদ্যান এলাকার বিভিন্ন স্থানে রোপণ করা হয়েছে।


Kumar Dulon Hajong

24 Blog posts

Comments