যেই মেয়েটা ছোটোবেলা থেকেই বুঝদার, আবদার বায়না খুব একটা করেনা, সেই মেয়েটার জন্মদিন বাবা মার কখনো মনে থাকেনা। অন্যদিকে যেই মেয়েটা রগচটা, জন্মদিন আসার দুই মাস আগ থেকে পুরা বাড়ি মাথায় করে তোলে, এটা কিনে দিতে হবে ওটা কিনে দিতে হবে, পার্টি করতে হবে, দাওয়াত রাখতে হবে বলে বলে নাছোড়বান্দার মতো জিদ করতে থাকে, তার জন্মদিনে বাবা মা ধার করে হলেও আয়োজন করে।
যেই মেয়েটার জীবনে অভিযোগ তেমন নেই, তার জন্যে ঘটা করে কেউ পাত্র দ্যাখেনা। যেই সম্বন্ধই আসুক পারলে তার গলাতেই ঝুলিয়ে দেয়। "ও অনেক বুঝদার, কোনো চাহিদা নাই, যেভাবে রাখবেন সেভাবে থাকবে" এসব বলে বলে কোনোমতে গছিয়ে দেয়ার চেষ্টা।
অথচ যেই মেয়েটা মাংস ছাড়া এক বেলা ভাত খায়না, তার জন্যে ঠিকই ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে এমন পরিবার খুঁজে আনা হয় যেখানে প্রতিবেলা মাংসই খাওয়ানো হবে, যেখানে তাকে নিজের হাতে কোনো কাজ করতে হবেনা।
যেই মেয়ে ডিজাইনার লেহেঙ্গা ছাড়া বিয়ে ভেঙ্গে দেয়ার হুমকি দেয়, তার জন্যে প্রেমিক ধার করে হলেও লেহেঙ্গা কেনার ব্যবস্থা করে। কিন্তু যেই মেয়ের স্বামীর ভালোবাসা, স্নেহ আর মনোযোগই একমাত্র চাওয়া, তার জন্যে অনেক সময় একটা গোলাপও উঠেনা হাতে।
যেই বউ ঘরে প্রবেশ করার আগেই শর্ত দেয় "এটা এটা এটা হলে আমি আপনার ছেলের ঘর করবো", বুকে পাথর চেপে হলেও শ্বশুরবাড়ি সেই শর্ত মানতে বাধ্য থাকে। কিন্তু যেই বউ সবাইকে বুঝার চেষ্টা করে, সবার দিক বিবেচনা করে, কখনো সেই বউকে হাতখরচের জন্যে দুইশো টাকা দেয়ার কথা কারো মাথায় আসেনা।
পৃথিবীতে যারা বুঝে তাদের বুঝেই যেতে হয়। যারা ছাড় দেয়, তারা ছাড় দিতেই থাকে। কিন্তু এই মানুষগুলোকে কেউ বুঝে না। এই মানুষগুলোকে কেউ ছাড় দেয়না।
পৃথিবী শক্তের ভক্ত, নরমের যম।
যে সঠিক হওয়ার পড়েও তর্ক এড়ানোর জন্যে গল্পটা আড়ালে রাখে, ভুল জায়গায় দাঁড়িয়ে অন্যায়কারী মানুষটাই নিজের মতো গল্প সাজিয়ে তাকে ভিলেন হিসেবে উপস্থাপন করে।
পৃথিবী নরম মনের মানুষকে ব্যবহার করার জন্য সবার আগে মাথায় আনলেও, কদর করে সবসময় পাথর দিলের জালিমদেরকেই