ফুল বা পুষ্প হল উদ্ভিদের বিশেষ একটি মৌসুমী অঙ্গ যা উদ্ভিদের প্রজননে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি উদ্ভিদের পরিবর্তিত বিটপ। ফুল এর সৌন্দর্যের জন্য জনপ্রিয়।
ফুল থেকে উদ্ভিদের ফল হয়।সপুষ্পক উদ্ভিদের যে রূপান্তরিত অংশ ফল ও বীজ উৎপাদনের মাধ্যমে বংশবিস্তারে সাহায্য করে তাকে ফুল বলে। কাণ্ড, শাখা-প্রশাখা শীর্ষে অথবা পাতার কক্ষে ফুল জন্মায়। ফুল উদ্ভিদের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন অংশ। সমস্ত সপুষ্পক উদ্ভিদের ফুল ফোটে ও এরা উদ্ভিদের বংশবিস্তারে সাহায্য করে। ফুলের জৈবিক কাজ হলো, প্রজনন সহজতর করা, সাধারনত ডিম্বানু দিয়ে শুক্রানু মিলনের জন্য একটি প্রক্রিয়া সরবরাহ করে।
পরাগায়ন দুই ধরনের। যথা: স্ব-পরাগায়ন এবং ক্রস পরাগায়ন। স্ব-পরাগায়ন তখন ঘটে যখন অ্যান্থার থেকে পরাগ একই ফুলের কলষ্কে বা একই গাছের অন্য কোন ফুলের উপর জমা হয়। অন্যদিকে ক্রস পরাগায়ন হলো, একই প্রজাতির ভিন্ন গাছের উপর এক ফুলের অ্যান্থার থেকে অন্য ফুলের কলষ্কে পরাগ স্থানান্তর। ফুলের মধ্যে স্ব-পরাগায়ন ঘটে যেখানে স্ট্যামেন এবং কার্পেল একই সময়ে পরিপক্ক হয় এবং অবস্থান করা হয় যাতে পরাগ ফুলের কলষ্কে অবতরণ করতে পারে। কিছু ফুল নিষেক ছাড়াই ডায়াস্পোরস তৈরি করে (পার্থেনোকার্পি)। ফুলগুলিতে স্পোরাঙ্গিয়া এবং গেমটোফাইটগুলি বিকাশ ঘটে এমন সাইট থাকে। অনেক ফুল প্রাণীদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে, যাতে তাদের পরাগ জন্য ভেক্টর হতে পারে।
নিষেকের পরে ফুলের ডিম্বাশয় বীজ সমন্বিত ফলের মধ্যে বিকাশ লাভ করে। ফুলের পুনঃ উৎপাদন সহজতর করার পাশাপাশি, ফুল দীর্ঘদিন ধরে মানুষের দ্বারা তাদের পরিবেশের সৌন্দর্য আনতে এবং রোম্যান্স , অনুষ্ঠান, জাদুবিদ্যা,ধর্ম, ওষুধ এবং খাবারের উৎসব হিসেবে ব্যবহার হয়েছে।
হাজার বছর ধরেই ফুলকে সৌন্দর্যের প্রতীক ও আধ্যাত্মিক বস্তু হিসেবে ধরা হয়। সনাতন ধর্মে দেব-দেবীদের ফুল এর মাধ্যমে আরাধনা করার রীতি রয়েছে। এমনকি বিশেষ বিশেষ দেব-দেবীর আরাধনায় বিশেষ বিশেষ ফুল ব্যবহৃত হয়। যেমন: শিবের পূজায় ধুতুরা ফুল, মা কালীর পূজায় জবা ফুল। তাছাড়া অনেক দেশেই ফুলকে রাষ্ট্রীয় প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। যেমন: বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক এ শাপলা ফুলের উপস্থিতি বিদ্যমান।
ফুল আমাদের পরিবেশেও অনেক বড় অবদান রাখে। পৃথিবীতে খাদ্য হিসেবে ফুলের মধুর কোনো তুলনা নেই। এমনকি ফুলের মধু এমন একটি খাদ্য যা অনেক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করে রাখা সম্ভব। আবার ফুলকে কখনো কখনো ভালবাসার প্রকাশ মাধ্যম হিসেবে ধরা হয়। বর্তমানে প্রেমিক-প্রেমিকাগণ গোলাপ ফুল এর মাধ্যমে ভালবাসার প্রকাশ করে থাকে।