ঋণ গ্রহণ

Comments · 18 Views

মূসা দ্দাস (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ধনী ব্য?

হাদিস নাম্বার -২২২৭

 

মুহাম্মদ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে যুদ্ধে শরীক হই। তখন তিনি বলেন, তুমি কি মনে কর, তোমার উটটি আমার নিকট বিক্রি করবে কি? আমি বললাম, হ্যাঁ। তারপর আমি সেটি তাঁর নিকট বিক্রি করলাম। পরে তিনি মদিনায় এলেন, আমি সকাল বেলা উটটি নিয়ে তাঁর নিকট গেলাম। তখন তিনি আমাকে এর দাম দিলেন।

 

 

 

হাদিস নাম্বার -২২২৮

 

মুয়াল্লা ইবনু আসা’দ (রাঃ) আবদুল ওয়াহিদ সূত্রে আ’মাশ (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমরা ইব্‌রাহীম নাখয়ীর কাছে ধার (বাকীতে) ক্রয় করা সম্পর্কে আলোচনা করলাম। তখন তিনি বললেন, আসওয়াদ (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, আয়িশা (রাঃ) থেকে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ইয়াহূদীর কাছে থেকে এক নির্দিষ্ট মিয়াদে (বাকীতে) খাদ্য ক্রয় করেন এবং তার নিকট নিজের লোহার বর্মটি বন্ধক রাখেন।

 

 

 

হাদিস নাম্বার -২২২৯

 

আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ উয়াযসী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি মানুষের মাল (ধার) নেয় পরিশোধ করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ তা’আলা তা আদায়ের ব্যবস্থা করে দেন। আর যে তা নেয় বিনষ্ট করার নিয়্যাতে আল্লাহ তা’আলা তাকে ধ্বংস করেন।

 

 

 

হাদিস নাম্বার -২২৩০

 

আহ্‌মদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) আবূ যার (রাঃ) থেকে, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সংগে ছিলাম। যখন তিনি উহুদ পাহাড় দেখলেন, তখন বললেন, আমি পছন্ন করি না যে, এই পাহাড়টি আমার জন্য সোনায় পরিণত করা হোক এবং এর মধ্য থেকে একটি দিনা ও (স্বর্ণ মুদ্রা) আমার নিকট তিন দিনের বেশী থাকুক, সেই দীনার ব্যতীত যা আমি ঋণ আদায়ের জন্য রেখে দেই। তারপর তিনি বললেন, যারা অধিক সম্পদশালী তারাই (সাওয়াবের দিক দিয়ে) স্বল্পের অধিকারী। কিন্তু যারা এভাবে ওভাবে ব্যয় করেন (তারা ব্যতীত)। (বর্ণনকারী) আবূ শিহাব তার সামনের দিকে এবং ডান ও বাম দিকে ইশারা করেন এবং বলেন, এইরূপ লোক খুব কম আছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি এখানেই অবস্থান কর। তিনি একটু দূরে গেলেন। আমি কিছু শব্দ শুনতে পেলাম। তখন আমি তার কাছে আসতে চাইলাম। এরপর “আমি ফিরে আসা পর্যন্ত তুমি এখানে অবস্থান কর” তাঁর ও কথাটি আমার মনে পড়ল। তিনি যখন আসলেন, আমি বললামঃ ইয়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম , যা আমি শুনলাম অথবা বললেন যে আওয়াজটি আমি শুনতে পেলাম তা কি? তিনি বললেন, তুমি কি শুনেছ? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেন, আমার কাছে জিবরাঈল আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছিলেন এবং তিনি বললেন, আপনার কোন উম্মত আল্লাহর সংগে কোন কিছু শরীক না করে মারা গেলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমি বললাম, যদিও সে এরূপ, এরূপ কাজ করে? তিনি বললেন হ্যাঁ।

 

 

 

হাদিস নাম্বার -২২৩১

 

আহ্‌মদ ইবনু শাবীব ইবুন সাঈদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার কাছে যদি উহুদ পাহাড়ের সমান সোনা থাকত, তাহলেও আমার পছন্দ নয় যে, তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পর তার কিছু অংশ আমার কাছে থাকুক। তবে এতটুকু পরিমাণ্ ব্যতীত, যা আমি ঋণ পরিশোধ করার জন্য রেখে দেই। ছালিহ ও উকাইল (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নাম্বার -২২৩২

 

আবূ ওয়ালীদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, জনৈক ব্যাক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তার পাওনা আদায়ের কড়া তাগাদা দিল। সাহাবায়ে কিরাম তাকে শায়েস্তা করতে উদ্যত হলেন। তিনি বললেনঃ তাকে ছেড়ে দাও। কেননা, পাওনাদারের কথা বলার অধিকার রয়েছে। তার জন্য একটি উট কিনে আন এবং তাকে তা দিয়ে দাও। তাঁরা বললেন, তার উটের চাইতে বেশী বয়সের উট ছাড়া আমরা পাচ্ছি না। তিনি বললেন, সেটই কিনে তাকে দিয়ে দাও। কারণ, তোমাদের উত্তম লোক সেই, যে উত্তমরূপে ঋণ পরিশোধ করে।

 

 

 

হাদিস নাম্বার -২২৩৩

 

মুসলিম (রহঃ) হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি, একজন লোক মারা গেল, তাকে জিজ্ঞাসা করা হল তুমি কি বলতে? সে বলল, আমি লোকজনের সাথে বেচা-কেনা করতাম। ধনীদেরকে অবকাশ দিতাম এবং গরীবদেরকে হ্রাস করে দিতাম। কাজেই তাকে মাফ করে দেওয়া হল। আবূ মাসউদ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট হতে এ হাদীস শুনেছি।

 

 

 

হাদিস নাম্বার -২২৩৪

 

মূসা’দ্দাদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একজন লোক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম - এর নিকট তার (প্রাপ্য) উটের তাগাদা দিতে আসে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের বললেন, তাকে একটি উট দিয়ে দাও। তাঁরা বললেন, তার চাইতে উত্তম বয়সের উটই পাচ্ছি। লোকটি বললো, আপনি আমাকে পূর্ণ হক দিয়েছেন, আল্লাহ আপনাকে যেন পূর্ণ হক দেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে সেটি দিয়ে দাও। কেননা মানুষের মধ্যে সেই উত্তর, যে উত্তমরূপে ঋণ পরিশোধ করে।

 

 

 

হাদিস নাম্বার -২২৩৫

 

আবূ নুআঈম (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যিস্মায় একজন লোকের এক নির্দিষ্ট বয়সের উট ঋণ ছিল। লোকটি তাঁর নিকট সেটির তাগাদা করতে আসল। তিনি সাহাবীদের বললেন, তাকে একটি উট দিয়ে দাও। তাঁরা সে বয়সের উট তালাশ করলেন। কিন্তু তার চাইতে বেশী বয়সের উট ছাড়া পাওয়া গেলো না। তিনি বললেন, সেটি তাকে দিয়ে দাও। লোকটি বলল, আপনি আমাকে পূর্ণ হক দিয়েছেন, আল্লাহ আপনার পূর্ণ বদলা দিন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের মধ্যে উত্তম লোক সেই, যে উত্তমরূপে ঋণ পরিশোধ করে।

 

 

 

হাদিস নাম্বার -২২৩৬

 

খাল্লাদ ইবনু ইয়াহ্‌ইয়া (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসলাম। তখন তিনি মসজিদে ছিলেন। মিসআর (রহঃ) বলেন, আমার মনে হয়, তিনি বলেছেন, তা ছিল চাশতের ওয়াক্‌ত। তিনি বললেন, দু’রাকাআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় কর। তাঁর কাছে আমার কিছু ঋণ প্রাপ্য ছিল। তিনি বললেন, দু’রাকাআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন এবং পাওনার চাইতেএ বেশী দিলেন।

হাদিস নাম্বার -২২৩৭

 

আবদান (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, তাঁর পিতা উহুদের যুদ্ধে শহীদ হন এবং তাঁর উপর কিছু ঋণ ছিল। পাওনাদাররা তাদের পাওনা সম্পর্কে কড়াকড়ি শুরু করে দিল। আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সমীপে আসলাম। তিনি তাদেরকে আমার বাগানের ফল নিয়ে নিতে এবং আমার পিতার অবশিষ্ট ঋণ মাফ করে দিতে বললেন। কিন্তু তারা তা মানল না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে আমার বাগানটি দিলেন না। আর তিনি (আমাকে) বলেন, আমরা সকালে তোমার কাছে আসব। তিনি সকাল বেলায় আমাদের কাছে আসলেন এবং বাগানের চারদিকে ঘুরে বরকতের জন্য দু’আ করলেন। আমি ফল পেড়ে তাদের সমস্ত ঋণ আদায় করে দিলাম এবং আমার কাছে কিছু অতিরিক্ত খেজুর রয়ে গেল।

 

 

 

হাদিস নাম্বার -২২৩৮

 

ইব্‌রাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ থেকে বর্ণিত যে, তাঁর পিতা একজন ইয়াহুদীর কাছে থেকে নেওয়া ত্রিশ ওসাক (খেজুর) ঋণ রেখে ইন্তেকাল করেন। জাবির (রাঃ) তার নিকট (ঋণ পরিশোধের জন্য) সময় চান। কিন্তু সে সময় দিতে অস্বীকার করে। জাবির ইবনু আবদুল্লাহ‌ (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে কথা বললেন, যেন তিনি তার জন্য ইয়াহূদীর কাছে সুপারিশ করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন এবং ইয়াহূদীর সাথে কথা বলেন, ঋণের বদলে সে যেন তার খেজুর গাছের ফল নিয়ে নেয়। কিন্তু সে তা অস্বীকার করল। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাগানে প্রবেশ করে সেখানে গাছের (চারদিক) হাঁটা চলা করলেন। তারপর তিনি জাবির (রাঃ) কে বললেন, ফল পেড়ে তার সম্পূর্ণ প্রাপ্য আদায় করে দাও। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে আসার পর তিনি ফল পাড়লেন এবং তাকে এরপর পূর্ণ ত্রিশ ওসাক (খেজুর) দিয়ে দিলেন এবং সতর ওসাক (খেজুর) অতিরিক্ত রয়ে গেল। জাবির (রাঃ)রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বিষয়টি অবহিত করার জন্য আসলেন। তিনি তাঁকে আসরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা অবস্থায় পেলেন। তিনি সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করলে তাঁকে অতিরিক্ত খেজুরের কথা অবহিত করলেন। তিনি বললেন- খবরটি ইবনু খাত্তাব (উমর) কে পৌঁছাও। জাবির (রাঃ) উমর (রাঃ) এর কাছে গিয়ে খবরটি পৌঁছালেন। উমর (রাঃ) তাঁকে বললেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বাগানে প্রবেশ করে হাঁটাচলা করলেন, তখনই আমি বুঝতে পারছিলাম যে, নিশ্চয় এতে বরকত দান করা হবে।

 

 

 

হাদিস নাম্বার -২২৩৯

 

ইসমাঈল (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ) এই বলে দু’আ করতেনঃ হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে গুনাহ এবং ঋণ থেকে পানাহ্ চাচ্ছি। একজন প্রশ্নকারী বলল, (ইয়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম )! আপনি ঋণ থেকে এত বেশী বেশী পানাহ্ চান কেন? তিনি জওয়াব দিলেন, মানুষ ঋণগ্রস্ত হলে যখন কথা বলে মিথা বলে এবং ওয়াদা করলে তা খেলাফ করে।

হাদিস নাম্বার -২২৪০

 

আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি মাল রেখে গেল, তা তার ওয়ারিসদের আর যে দায়-দায়িত্বের বোঝা রেখে গেল, তা আমার যিম্মায়।

 

 

 

হাদিস নাম্বার -২২৪১

 

আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দুনিয়া ও আখিরাতে আমি প্রত্যেক মু’মিনেরই সবচেয়ে ঘনিষ্ঠতর। যদি তোমরা ইচ্ছা কর তাহলে এ আয়তটি তিলাওয়াত করে দেখঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু’মিনেদর নিকট তাদের নিজদের অপেক্ষা ঘনিষ্ঠতর। তাই যখন কোন মু’মিন মারা যায় এবং মাল রেখে যায়, তা হলে তার যে আত্মীয়-স্বজন থাকে তারা তার ওয়ারিস হবে; আর যদি সে ঋণ কিংবা অসহায় পরিজন রেখে যায় তবে তারা যেন আমার নিকট আসে; আমই তাদের অভিভাবক।

 

 

 

হাদিস নাম্বার -২২৪২

 

মূসা দ্দাস (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ধনী ব্যাক্তির (ঋণ আদায়ে) টালবাহানা করা জুলুম।

 

 

 

হাদিস নাম্বার -২২৪৩

 

মূসা’দ্দাদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক লোক (ঋণ পরিশোধের) তাগাদা দিতে আসল এবং কড়া কথা বলল। সাহবীগণ তাকে শায়েস্তা করতে উদ্যত হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে ছেড়ে দাও। হক্‌দারের কড়া কথা বলার অধিকার রয়েছে।

 

 

 

হাদিস নাম্বার -২২৪৪

 

আহ্‌মদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন কিংবা তিনি বলেছেন যে, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যখন কেউ তার মাল এমন লোকের কাছে পায়, সে নিঃসম্বল হয়ে গেছে, তবে অন্যের চাইতে সে-ই তার বেশী হকদার। আবূ আবদুল্লাহ‌ (ইমাম বুখারী র) বলেন, এ সনদে উল্লেখিত রাবীগণ বিচারকের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। তারা হলেন ইয়াহ্‌ইয়া ইবনু সাঈদ, আবূ বকর ইবনু মুহাম্মদ, উমর ইবনু আবদুল আযীয, আবূ বকর ইবনু আবদুর রহমান (রহঃ) ও আবূ বকর (রহঃ) তারা সকলেই মদিনায় বিচারক ছিলেন।

 

 

 

হাদিস নাম্বার -২২৪৫

 

মূসা’দ্দাদ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে কেউ তার গোলামকে মরণোত্তর শর্তে আযাদ করল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কে আমার থেকে এই গোলামটি খরিদ করবে? তখন নু’আইম ইবনু আবূদুল্লাহ (রাঃ) সেটি ক্রয় করলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দাম গ্রহণ করে গোলামের মালিককে দিয়ে দিলেন।

হাদিস নাম্বার -২২৪৬

 

মূসা (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ (রাঃ) উহুদের যুদ্ধে শহীদ হন এবং পরিবার-পরিজন ও ঋণ রেখে যান। আমি পাওনাদারের নিকট কিছু ঋণ মাফ করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু তারা তা অস্বীকার করে। আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম - এর নিকট গিয়ে তাঁর দ্বারা তাদের কাছে সুপারিশ করাই। তবুও তারা অস্বীকার করল। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, প্রত্যেক শ্রেণীর খেজুর আলাদা আলাদা করে রাখ। আযক ইবনু যায়দ এক জায়গায়, লীন আরেক জায়গায় এবং আজওয়াহ অন্য জায়গায় রাখবে। তারপর পাওদারদের হাজির করবে। তখন আমি তোমার নিকট আসব। আমি তাই করলাম। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসলেন এবং তার উপর বসলেন। আর প্রত্যেককে মেপে মেপে দিলেন। শেষ পর্যন্ত পুরাপুরি আদায় করলেন। কিছু খেজুর যেমন ছিল তেমনি রয়ে গেল, যেন কেউ স্পর্শ করেনি। আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম –এর সঙ্গে একবার আমাদের একটি উটে চড়ে জিহাদে গিয়েছিলাম। উটটি পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ে এবং আমাকে নিয়ে পেছনে পড়ে যায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেছন থেকে উটটিকে চাবুক মারেন এবং বলেন, এটি আমার নিকট বিক্রি করে দাও। তবে মদিনা পর্যন্ত তুমি এর উপর সাওয়ার হতে পারবে। আমরা যখন মদিনার নিকটে আসলাম তখন আমি তাঁর কাছে জলদি বাড়ী যাওয়ার অনুমতি চাইলাম এবং বললাম, ইয়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমি নব বিবাহিত। তিনি বললেন, কুমারী বিয়ে করেছ, না বিবাহিতা? আমি বললাম, বিবাহিতা। কেননা (আমার পিতা) আবদুল্লাহ (রাঃ) ছোট ছোট মেয়ে রেখে শহীদ হয়েছেন। তাই আমি বিবাহিতা বিয়ে করেছি, যাতে সে তাদের জ্ঞান ও আদব শিক্ষা দিতে পারে। তিনি বললেন, তবেতোমার পরিবারের নিকট যাও। আমি গেলাম এবং উট বিক্রির কথা আমার মামার কাছে বললাম। তিনি আমাকে তিরস্কার করলেন। আমি তার নিট উটটি ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এটিকে আঘাত করার ও তার (মু’জিযার) কথা উল্লেখ করলাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় পৌঁছলে আমি উটটি নিয়ে তাঁর কাছে হাযির হলাম। তিনি আমাকে উটটির মূল্য এবং উটটিও দিয়ে দিলেন। আর লোকদের সংগে আমার (গণীমতের) অংশ দিলেন।

 

 

 

হাদিস নাম্বার -২২৪৮

 

উসমান (রহঃ) মুগীরা ইবনু শোবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তা’য়ালা তোমাদের উপর হারাম করেছেন, মায়ের নাফরমানী, কণ্যা সন্তানদেরকে জীবন্ত কবর দেওয়া, কারো প্রাপ্য না দেওয়া এবং অন্যআয়ভাবে কিছু নেওয়া আর অপছন্দ করেছেন অনর্থক বাক্য ব্যয়, অতিরিক্ত প্রশ্ন করা, আর মাল বিনষ্ট করা।

 

 

 

হাদিস নাম্বার -২২৪৯

 

আবূল ইয়ামান (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম - কে বলতে শুনেছেন, তোমরা প্রত্যেকেই রক্ষক। আর প্রত্যেকেই তার অধীনস্হদের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসিত হবে। নেতা (ইমাম) একজন রক্ষক, সে তার অধীনস্হদের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসিত হবে। পুরুষ তার পরিবারের রক্ষক, সে তার পরিবারের লোকজন সম্বন্ধে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী তার স্বামীর ঘরের রক্ষক, তাকে তার রক্ষনাবেক্ষন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, আমি এ সকলই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। আমার মনে হয় তিনি এ কথাও বলেছেন, ছেলে তার পিতার সম্পত্তির রক্ষক এবং সে জিজ্ঞাসিত হবে তার রক্ষনাবেক্ষন সম্বন্ধে। অতএব, তোমরা প্রত্যেকেই রক্ষক এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তার অধীনস্হদের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসিত হবে।

 

 

 

 

 

 

Comments
Read more