ইলিশ মাছে জন্য কারো সংসার ভাঙ্গে। আমার মায়ের ভেঙেছে, মাত্র ৫০০ টাকা দামের ইলিশ মাছের মাথা নিজে খেয়ে ফেলার অপরাধে মা চিরতরে বাবার বাড়ি ছেড়ে হাটা দেন।
ঘটনা টা শুরু থেকে বলি তবে
আমার বাবা-মায়ের ভালোবাসার বিয়ে।তাদেরই ভালোবাসার ফসল আমি।তবে আমার জন্মানোর ৬ বছর হয়ে গেলো আমার দাদী এখনো আমার মা কে আপন করে নিতে পারেনি। মায়ের করা প্রতিটি কাজ দাদী নিখুত ভাবে ঘুচিয়ে দেখতেন। যদি একটু ভূল হতো তা নিয়ে গাল মন্দ করে দিন কাটিয়ে দেওয়া আমার দাদীর নৃত্যদিনের কাজ।মায়ের প্রতি দাদীর এরুপ আচরণ এক মাত্র কারন দাদীর বোনের মেয়ে রুমকি ফুপু।ফুপু ছোট বেলা থেকেই আমাদের বাড়িতে থাকতেন,দাদীই থাকে আদর সোহাগ দিয়ে বড় করেছেন,তাই দাদীর ইচ্ছে ছিলো বাবার সাথে ফুপুর বিয়ে দিয়ে এ বাড়িতেই রাখবেন,কিন্তু দাদীর আশা ভরসা আকাংকিত সব স্বপ্ন বাবা মাকে বিয়ে করে তচনচ করে দিয়েছে তাই আজ আমার দাদী রিনা খান হয়ে আমার মাকে সাবানার চরিত্রে বসিয়েছে।বিয়ের আগে বাবা সব সময় দাদীর কথা ক থেকে খ হতে দেরি তা পালন করতে দেরি করতো না। আর এতো কিছুর পর বাবা দাদীর এতো বড় ভাবসম্প্রসারন পালন না করে মাকে বিয়ে করলো, তাই এই ভাবসম্প্রসারন দাদী রচনা বানিয়ে এখনো হজম করতে পারেনি।সেই রাগ আজ ৯ বছর ধরে দাদী আম্মার ওপর জুলুম করে চালিয়ে দিচ্ছেন।আমার মায়ের ইলিশ মাছ খুবই প্রিয় ছিলো।তবে বাবা ইলিশ মাছ আনতেন না খুব সহজে,,আনলেই দাদী চিৎকার চেচামেচি জুড়ে দিতো বাড়িতে।মা নাকি ইলিশ মাছের কাটা দাদীর গলায় আটকে মারতে চান।কাটা তো শুধু অজুহাত মাত্র দাদী চাই তো না কখনো মায়ের পছন্দ মত কিছু হোক এ বাড়িতে,,এটা সবাই বুঝতো কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করতো না,,,তাই সংসারের অশান্তি না হওয়ার জন্য মা ইলিশ মাছ খাওয়া ছেড়ে দিলো। তারপর ও বাবা কখনো মায়ের জন্য ইচ্ছেয় ইলিশ আনেনি বরং মাকে বুঝাতো দাদী বয়স্ক মানুষ কয়দিনই বা বাঁচবে তাই একট মানিয়ে নিতে, একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। মা বাবার কথা শুনতো আর চুপটি করে থাকতো আর টপটপ করে চোখের পানি পড়তো,আমি এসব কিছু লক্ষ্য করে মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকতাম যদি কিছু বুঝতে পারি কিন্তু বয়স টা তো এতো কিছু বুঝর ক্ষমতা দেয়নি তখন আমায়।
একটা বিষয় দাদী মাকে দেখতে না পারলেও আমাকে খুব আদর করতো।পুরো বাড়িতে সব থেকে কম স্বরে ওনি যার সাথে কথা বলতেন ওটায় আমি।আমারে দাদী বুজি বলে ডাকতো, ঘরে কোনো খাবার খেলে আমার জন্য ও রাখতো অর্ধেকটা।তাই দিনের বেশির ভাগ সময়টা আমি দাদীর পিছু থাকতাম।আর শুনতাম মায়ের নামে হাজারো অভিযোগ
ফুপিকে বিয়ে না করে মাকে কেন বিয়ে করলো তা নিয়ে বাবা নিয়ে আক্ষেপ।
আমার মা আবার ও সন্তান সম্ভবা হয় সবাই তো মহা খুশি সেই থেকে আমি মায়ের সাথে গল্প করতে শুরু করি গুটুর গুটুর করতাম নতুন বাবুর জন্য, সারাক্ষণ আম্মু আশে পাশে থাকতাম। আর ভাবতাম এই বুঝি পরী রাজ্য থেকে বাবু দিয়ে যাবে আর আমি বড় আপু হয়ে যাবো।দাদী বার বার তার সাথে থাকতে বলতো আমি বাবুর লোভে মায়ের পাশেই থাকতাম তাই দাদী মায়ের ওপর আরো রেগে যায় আর বলে বাবার মতো আমাকেও মা কেড়ে নিচ্ছে। আমি কখনো কল্পনা করিনি এতো লোভের কারনে আমি আমার পরীর রাজ্যের পুচকোকে আর দেখতে পারবো না,,এক রাতে আমি বাবা মায়ের মাঝে শুয় তখন বাবা মাকে বললো এখন তো মায়ের ভালো মন্দ খেতে হবে,,নইতো বাবু অপুষ্টি হবে।বলো তোমার কি খাইতে মন চাই,,মা মৃদুস্বরে বললো অনেকক দিন ইলিশ খাওয়া হয় না।আর এখন তো ইলিশের সিজম আপনি কাল ইলিশ আনবেন আমি নিজের হাতে রান্না করে খাবো।
বাবা হাসতে হাসতে সম্মতি দেয়,,আর পরের দিন মাকে নিয়ে হাটে যায়।সাথে আমিও যায় আমি বাজারের সব থেকে বড় ইলিশটার দিকে হাত দেখায়।বাবা আমার দেখানো ইলিশ টাই নেই তারপর মনের আনন্দে আমরা বাড়ি আসি।তারপর মা নিজের হাতে যন্ত করে ইলিশ টা কেটে রান্না করে সারাবাড়ি ইলিশের গন্ধে মো মো করছে।
মা দুপুরে আমারে আর দাদীরে খাবার খেতে ডাকে দাদী এসে ইলিশের মাথা চাই কিন্তু মা তো আগেই মাথা খেয়ে নিয়েছে পোয়াতি আর তার ইচ্ছে হচ্ছিলো মাথা খেতে। মা দাদীর প্লেটে মাছের বড় এক পিচ দিতে আসবে অমনি দাদী ছু মেরে থালা টা উঠানে ফেলে দেই।ঠিক ওই সময় বাবা দোকান বন্ধ করে বাড়ি আসে খাবারের জন্য, বাড়িতে এসে উঠানে পা দিতেই দেখে ইলিশ মাছের তরকারিতে উঠান ছড়িয়ে-ছিটিয় আছে।বাবাকে দেখে দাদী ন্যাকা কান্না করে বাবার দিকে ছুটে আসে দাদীর এরুপ আসা দেখে বাবা মায়ের দিকে ভ্রু কুচকে তাকায়। দাদী কান্না করে বলে মাছ চাওয়াতে মায়ের জন্য আনা মাছ দাদীকে খেতে দিবে না বলে মাছ উঠানে ছিটায়ছে আর বলেছে এতো খেতে ইচ্ছে হলে কুড়িয়ে খেতাম আর ওই মাছের কাটা গলায় বেধে জেনো মারা যায়,,মা তখন বলে সামান্য একটা মাছের মাথা খাওয়াতে আপনি এতো মিথ্যা কি ভাবে বলতেছেন,,আপনও তো একজন মা,, এ সময় কেমন লাগে আপনি তো জানেন। মায়ের এসব কথায় দাদী মাকে গালাগালি দিতে লাগলো তাই মা আর চুপ না থেকে উওর দিলে বাবা মাকে জোরে কোষে একটা থাপ্পড় মারে টাল সামলাতে না পেরে মা পড়া যায় আর ব্যথা শুরু হয় বাবা ও দাদী ভয় পেয়ে যায় আর কোনো রকম মাকে হাসপাতালে পাঠায় মা বেঁচে গেলেও বাচঁতে পারিনি আমার পুচকো পরির রাজ্যের স্বপ্ন,, তারপর হাসপাতাল থেকে মা আর দাদী বাড়ি ফিরেনি,,নানা বাড়িতে আমাকে নিয়ে একেবারে চলে আসে।