নির্বাচন ঘোষণা হলে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরবেন বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। ৯০ দিনের মধ্যে তিনি নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে রয়টার্সকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে সজীব ওয়াজেদ দাবি করেছেন, বাংলাদেশ ছাড়ার আগে শেখ হাসিনা কোন পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেননি।
'আমার মা আনুষ্ঠানিকভাবে কখনোই পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেননি। তিনি সেই সময় পাননি,'' ওয়াশিংটন থেকে রয়টার্সকে বলেন সজীব ওয়াজেদ।
যদিও ৫ই অগাস্ট একটি সংবাদ সম্মেলনে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারউজ-জামান বলেছিলেন, ''মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। এখন একটা অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করে আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবো।''
গত ৫ই আগস্ট ছাত্র জনতার তীব্র আন্দোলনের পর ব্যাপক অস্থিরতা তৈরি হলে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলো বলছে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভে ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই মারা গেছে পুলিশের গুলিতে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতায় হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে।
মি. ওয়াজেদ বিবিসিকে বলেন, “অবশ্যই তিনি বাংলাদেশে ফিরবেন, যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে”।
নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে সেনা সমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকার গত বৃহস্পতিবার ১৬ জন উপদেষ্টাসহ শপথ গ্রহণ করেছে।
উপদেষ্টাদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই জন নেতাও রয়েছে।
তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মি. ওয়াজেদ এখন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন।
তিনি ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছিলেন।
“তিনি অবশ্যই দেশে ফিরে যাবেন”, বলেছেন তার ছেলে জয়।
অন্যদিকে রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, '' তিনি (শেখ হাসিনা) একটি বিবৃতি দেয়ার এবং পদত্যাগ করার পরিকল্পনা করছিলেন। কিন্তু তারপরে বিক্ষোভকারীরা তার বাসভবনের উদ্দেশ্যে মিছিল নিয়ে আসতে শুরু করে। তখন আর কোন সময় ছিল না। আমার মা এমনকি ব্যাগ গোছানোর সময়ও পাননি। সংবিধান অনুযায়ী, তিনি এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।''
তিনি দাবি করেছেন, সেনাপ্রধান ও বিরোধী দলগুলোর সাথে আলোচনা করে সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট। প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক পদত্যাগ ছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করাকে 'ভবিষ্যতে আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাতে পারে' বলে তিনি দাবি করেন।