তেঁতুলের নাম শুনলেই মুখে আসে পানি। টক-মিষ্টি জাতীয় দেশি এ ফলটির জনপ্রিয়তা থাকলেও এটি খাওয়া নিয়ে প্রচলিত আছে নানা অদ্ভুত ধারণা। যেমন অনেকেই বলেন, তেঁতুল খেলে নাকি রক্ত পানি হয়ে যায়। কিন্তু আসলেই কি তাই?
এ বিষয়ে আমাদের জানিয়েছেন সিলেট ডায়াবেটিস অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালের ডায়াবেটিস এডুকেটর ও পুষ্টিবিদ স্বর্ণালী দাস বিজয়া।
তার আগে চলুন তার কাছ থেকে প্রথমে তেঁতুলের কিছু উপকারিতা জেনে নিই-
তেঁতুলের প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এসব উপাদান শরীরের হৃদরোগ, ক্যানসার ও ডায়াবেটিসের মতো রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে।
বিভিন্ন ফাইটোক্যামিকেল থাকার কারণে তেঁতুল শরীরের রক্তের গ্লুকোজ কমাতে ভূমিকা রাখে। ডায়াবেটিস রোগীদের হাইপারগ্লাইসেমিয়া অর্থাৎ রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ অত্যধিক পরিমাণে বেড়ে যাওয়া প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে।
তেঁতুলে থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এ কারণে যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তারা তেঁতুলের জুস বানিয়ে খেতে পারেন। তবে কিডনির সমস্যা থাকলে তেঁতুলের জুস খাওয়া উচিত না। এতে কিডনি রোগীদের পটাশিয়ামের মাত্রা আরও বেড়ে যেতে পারে।তেঁতুল রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড ও প্লাজমা কোলেস্টেরল যেমন, এলডিএল কমিয়ে রক্তনালিতে প্লাগ তৈরি হতে বাধা দেয় এবং এথেরোক্লেরোসিস নামক রোগের প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। এর পাশাপাশি লিভারে ফ্যাট জমা হওয়ার প্রবণতাকেও কমায়।
তেঁতুলের মতো টকজাতীয় ফলে থাকা ভিটামিন সি সংযোজক কলার কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে। কোলাজেনের উৎপাদন সহজেই কাটা বা ক্ষতস্থানকে মাংসপেশির তন্তু দিয়ে ভরাট করে ফেলে এবং ঘা শুকিয়ে ফেলে। কাজেই দেখা যাচ্ছে টক জাতীয় ফল খেলে ঘা পাকে না। বরং ঘা শুকাতে বিশেষভাবে কার্যকরী টক জাতীয় ফল।
তেঁতুলের এ সব উপকারিতা দেখে অনেকে আবার ভাবতে পারেন তাহলে প্রতিদিন তেঁতুল খেয়ে শরীর সুস্থ রাখা যায়। তবে বিষয়টা মোটেও এমন না। কোনো খাবারই শরীরের জন্য অতিরিক্ত ভালো না। তেমনই তেঁতুলও একটানা প্রতিদিন খাওয়া উচিত হবে না। কিছুদিন পরপর বা স্বাদের পরিবর্তনের জন্য এ ফলটি খেতে পারেন। অতিরিক্ত তেঁতুল খেলে শরীর অসুস্থ হয়ে যেতে পারে।
তেঁতুল খেলে কি সত্যিই রক্ত পানি হয়ে যায়
পুষ্টিবিদ স্বর্ণালী দাস বিজয়া বলেন, তেঁতুল নিয়ে আমাদের দেশের মানুষের অনেক নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। তেঁতুল খেলে রক্ত পানি হয়ে যায় কথাটি কুসংস্কার মাত্র।মারমাদের ভাষায় হাও মং এবং রাখাইনরা বলে তাতু। ইংরেজিতে ট্যামারিন্ড, বৈজ্ঞানিক নাম ট্যামারিন্ডুস ইন্ডিকা। হিন্দিতে ইমলি এবং শ্রীলঙ্কায় ইয়াম্বালা বলা হয়। তেঁতুল দীর্ঘজীবী বৃক্ষ। কয়েকশত বছর ধরে বেঁচে থাকে। আকারেও বেশ বড় হয়। দেখতে খুবই সুন্দর। অধিক শাখা-প্রশাখা থাকায় প্রতিকূলতার সহ্য ক্ষমতা রয়েছে যথেষ্ঠ। গাছের উচ্চতা সাধারণত ৭০ থেকে ৮০ ফুট হয়ে থাকে। এর আদি নিবাস আফ্রিকার সাভানা অঞ্চল। তবে সুদান থেকে বীজের মাধ্যমে বাংলাদেশে বংশবিস্তার হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
তেঁতুল দেখে জিভে জল আসে না এমন মানুষ পাওয়া খুব কঠিন।তেঁতুল পছন্দ করে না এমন নারী খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তাহলে কী ছেলেরা এ তালিকায় নেই? তাও কী করে বলি! খেতে বসলে দেখা যায়, কোনো কোনো পুরুষ মেয়েদেরও হার মানায়। আসলে এ ফলটি সবার কাছে অন্য এক আকর্ষণ। দক্ষিণ আফ্রিকায় মূল্যবান খাবারের মধ্যে তেঁতুলের স্থান অন্যতম। বিশেষ করে তরূণীদের বেলায়। তবে অনেকেরই ধারণা তেঁতুল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং তেঁতুল খেলে রক্ত পানি হয়।
“তেতুল খেলে রক্ত পানি হয়ে যায় কিংবা তেতুল মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর” আধুনিক ডাক্তারদের মতে এ ধারনা সম্পূর্ণ ভুল। সব কিছুরই যেমন ভাল ও মন্দ আছে। তেমনি তেতুল এর ও ভাল ও মন্দ বা উপকারিতা ও অপকারিতা উভয়ই আছে। গরমে এটির খুব কদর বারে অন্য সময়ের তুলনায়। ছেলে মেয়ে উভয়ে তেতুল খেতে পারেন। তেঁতুল ভরাপেটে খাওয়াই ভাল।
তেতুলের নানাবিধ অপকারীতা ও ভেষজগুণ সম্পর্কে জেনে নিই।
তেতুলের নানাবিধ অপকারীতা ও ভেষজগুণ সম্পর্কে জেনে নিই।
মারমাদের ভাষায় হাও মং এবং রাখাইনরা বলে তাতু। ইংরেজিতে ট্যামারিন্ড, বৈজ্ঞানিক নাম ট্যামারিন্ডুস ইন্ডিকা। হিন্দিতে ইমলি এবং শ্রীলঙ্কায় ইয়াম্বালা বলা হয়। তেঁতুল দীর্ঘজীবী বৃক্ষ। কয়েকশত বছর ধরে বেঁচে থাকে। আকারেও বেশ বড় হয়। দেখতে খুবই সুন্দর। অধিক শাখা-প্রশাখা থাকায় প্রতিকূলতার সহ্য ক্ষমতা রয়েছে যথেষ্ঠ। গাছের উচ্চতা সাধারণত ৭০ থেকে ৮০ ফুট হয়ে থাকে। এর আদি নিবাস আফ্রিকার সাভানা অঞ্চল। তবে সুদান থেকে বীজের মাধ্যমে বাংলাদেশে বংশবিস্তার হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
তেঁতুল দেখে জিভে জল আসে না এমন মানুষ পাওয়া খুব কঠিন।তেঁতুল পছন্দ করে না এমন নারী খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তাহলে কী ছেলেরা এ তালিকায় নেই? তাও কী করে বলি! খেতে বসলে দেখা যায়, কোনো কোনো পুরুষ মেয়েদেরও হার মানায়। আসলে এ ফলটি সবার কাছে অন্য এক আকর্ষণ। দক্ষিণ আফ্রিকায় মূল্যবান খাবারের মধ্যে তেঁতুলের স্থান অন্যতম। বিশেষ করে তরূণীদের বেলায়। তবে অনেকেরই ধারণা তেঁতুল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং তেঁতুল খেলে রক্ত পানি হয়।
“তেতুল খেলে রক্ত পানি হয়ে যায় কিংবা তেতুল মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর” আধুনিক ডাক্তারদের মতে এ ধারনা সম্পূর্ণ ভুল। সব কিছুরই যেমন ভাল ও মন্দ আছে। তেমনি তেতুল এর ও ভাল ও মন্দ বা উপকারিতা ও অপকারিতা উভয়ই আছে। গরমে এটির খুব কদর বারে অন্য সময়ের তুলনায়। ছেলে মেয়ে উভয়ে তেতুল খেতে পারেন। তেঁতুল ভরাপেটে খাওয়াই ভাল।
তেতুলের অপকারিতা
১। রক্তপাত বৃদ্ধি করে নির্দিষ্ট ঔষধের ক্ষেত্রেঃ
তেঁতুল রক্তপাতের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে এবং মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করতে পারে যদি নির্দিষ্ট কিছু ঔষধের সাথে গ্রহণ করা হয়। এ ধরনের ঔষধগুলো হচ্ছে
অ্যাসপিরিন, ইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সিন এর মত নন-স্টেরয়ডাল অ্যান্টিইনফ্লামেটরি ড্রাগ (NSAIDs),
রক্ত পাতলা করার ঔষধ (হেপারিন, ওয়ারফেরিন ইত্যাদি )অ্যান্টি-প্লাটিলেট ড্রাগ (ক্লপিডোগ্রেল)
যদি আপনি এই ঔষধগুলো গ্রহণের সময় তেঁতুল খান তাহলে শরীরে এদের শোষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।এরা শরীরে অনেক বেশি কাজ করা শুরু করে এবং ক্রমান্বয়ে অধিক রক্তপাত শুরু হয়।
২। হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারেঃ
অনেক বেশি পরিমাণে তেঁতুল খেলে রক্তের সিরাম গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায় বলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়। পুষ্টিবিদেরা প্রতিদিন ১০ গ্রাম তেঁতুল গ্রহণের পরামর্শ দেন।
যা নিয়মিত খাদ্যগ্রহণের ০.৮ % হতে হবে। এর বেশি গ্রহণ করলে শরীরে গ্লুকোজের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা যারা রক্তের চিনির মাত্রা কমানোর ঔষধ গ্রহণ করেন তারা এ বিষয়ে সতর্ক থাকবেন।
৩। অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারেঃ
তেঁতুলের সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে অ্যালার্জি বা অতিসংবেদনশীলতা। এ কারণে কিছু কিছু মানুষের মধ্যে র্যাশ, চুলকানি, ইনফ্লামেশন, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বমি হওয়া বা শ্বাসকষ্ট হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা যায়।
৪। দাঁতের এনামেল নষ্ট করেঃ
তেঁতুল উচ্চ মাত্রার এসিডিক প্রকৃতির। তাই নিয়মিত তেঁতুল খেলে দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই অতিরিক্ত তেঁতুল খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য যেমন খারাপ তেমনি আপনার দাঁতের জন্য ও খারাপ।
৫। পিত্তপাথর গঠনে সাহায্য করেঃ
ভারতীয় গবেষক প্রমাণ করেছেন যে, ঘন ঘন প্রচুর পরিমাণে তেঁতুল খাওয়া পিত্তপাথর হতে সাহায্য করে। এর ফলে জন্ডিস, তীব্র জ্বর, পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, পরিপাকের সমস্যা ও লিভারের সমস্যা হতে পারে।
৬। এসিড রিফ্লাক্স বৃদ্ধি করেঃ
তেঁতুল এসিডিক খাবার তাই এটি বেশি খেলে আমাদের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল নালীতে বিশেষ করে পাকস্থলীতে এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই যদি এসিড রিফ্লাক্সের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আপনার তেঁতুল খাওয়া থেকে দূরে থাকা উচিৎ।
৭. গর্ভবতি মা ও স্তন্য প্রদানকারি মায়েরদের ক্ষেত্রে তেতুল সেবন করা বিরত থাকা উচিৎ।
৮. যে কোন সার্জারি করার কমপক্ষে ১৫ দিন আগে তেতুল খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
এছাড়াও যদি রক্তনালীর সংকোচনের ঔষধ গ্রহণ করে থাকেন তাহলে তেঁতুল খাওয়া থেকে বিরিত থাকতে হবে। এটি রক্তনালীকে আরো সরু করে দিবে। ফলে রক্তপ্রবাহ কম হবে এবং রক্তনালী পুরোপুরি বন্ধও হতে পারে। নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিকের সাথে প্রতিক্রিয়া দেখায় তেঁতুল।
তেতুলের নানাবিধ অপকারীতা ও ভেষজগুণ সম্পর্কে জেনে নিই।
তেতুলের নানাবিধ অপকারীতা ও ভেষজগুণ সম্পর্কে জেনে নিই।
মারমাদের ভাষায় হাও মং এবং রাখাইনরা বলে তাতু। ইংরেজিতে ট্যামারিন্ড, বৈজ্ঞানিক নাম ট্যামারিন্ডুস ইন্ডিকা। হিন্দিতে ইমলি এবং শ্রীলঙ্কায় ইয়াম্বালা বলা হয়। তেঁতুল দীর্ঘজীবী বৃক্ষ। কয়েকশত বছর ধরে বেঁচে থাকে। আকারেও বেশ বড় হয়। দেখতে খুবই সুন্দর। অধিক শাখা-প্রশাখা থাকায় প্রতিকূলতার সহ্য ক্ষমতা রয়েছে যথেষ্ঠ। গাছের উচ্চতা সাধারণত ৭০ থেকে ৮০ ফুট হয়ে থাকে। এর আদি নিবাস আফ্রিকার সাভানা অঞ্চল। তবে সুদান থেকে বীজের মাধ্যমে বাংলাদেশে বংশবিস্তার হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
তেঁতুল দেখে জিভে জল আসে না এমন মানুষ পাওয়া খুব কঠিন।তেঁতুল পছন্দ করে না এমন নারী খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তাহলে কী ছেলেরা এ তালিকায় নেই? তাও কী করে বলি! খেতে বসলে দেখা যায়, কোনো কোনো পুরুষ মেয়েদেরও হার মানায়। আসলে এ ফলটি সবার কাছে অন্য এক আকর্ষণ। দক্ষিণ আফ্রিকায় মূল্যবান খাবারের মধ্যে তেঁতুলের স্থান অন্যতম। বিশেষ করে তরূণীদের বেলায়। তবে অনেকেরই ধারণা তেঁতুল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং তেঁতুল খেলে রক্ত পানি হয়।
“তেতুল খেলে রক্ত পানি হয়ে যায় কিংবা তেতুল মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর” আধুনিক ডাক্তারদের মতে এ ধারনা সম্পূর্ণ ভুল। সব কিছুরই যেমন ভাল ও মন্দ আছে। তেমনি তেতুল এর ও ভাল ও মন্দ বা উপকারিতা ও অপকারিতা উভয়ই আছে। গরমে এটির খুব কদর বারে অন্য সময়ের তুলনায়। ছেলে মেয়ে উভয়ে তেতুল খেতে পারেন। তেঁতুল ভরাপেটে খাওয়াই ভাল।
তেতুলের অপকারিতা
১। রক্তপাত বৃদ্ধি করে নির্দিষ্ট ঔষধের ক্ষেত্রেঃ
তেঁতুল রক্তপাতের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে এবং মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করতে পারে যদি নির্দিষ্ট কিছু ঔষধের সাথে গ্রহণ করা হয়। এ ধরনের ঔষধগুলো হচ্ছে
অ্যাসপিরিন, ইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সিন এর মত নন-স্টেরয়ডাল অ্যান্টিইনফ্লামেটরি ড্রাগ (NSAIDs),
রক্ত পাতলা করার ঔষধ (হেপারিন, ওয়ারফেরিন ইত্যাদি )অ্যান্টি-প্লাটিলেট ড্রাগ (ক্লপিডোগ্রেল)
যদি আপনি এই ঔষধগুলো গ্রহণের সময় তেঁতুল খান তাহলে শরীরে এদের শোষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।এরা শরীরে অনেক বেশি কাজ করা শুরু করে এবং ক্রমান্বয়ে অধিক রক্তপাত শুরু হয়।
২। হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারেঃ
অনেক বেশি পরিমাণে তেঁতুল খেলে রক্তের সিরাম গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায় বলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়। পুষ্টিবিদেরা প্রতিদিন ১০ গ্রাম তেঁতুল গ্রহণের পরামর্শ দেন।
যা নিয়মিত খাদ্যগ্রহণের ০.৮ % হতে হবে। এর বেশি গ্রহণ করলে শরীরে গ্লুকোজের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা যারা রক্তের চিনির মাত্রা কমানোর ঔষধ গ্রহণ করেন তারা এ বিষয়ে সতর্ক থাকবেন।
৩। অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারেঃ
তেঁতুলের সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে অ্যালার্জি বা অতিসংবেদনশীলতা। এ কারণে কিছু কিছু মানুষের মধ্যে র্যাশ, চুলকানি, ইনফ্লামেশন, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বমি হওয়া বা শ্বাসকষ্ট হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা যায়।
৪। দাঁতের এনামেল নষ্ট করেঃ
তেঁতুল উচ্চ মাত্রার এসিডিক প্রকৃতির। তাই নিয়মিত তেঁতুল খেলে দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই অতিরিক্ত তেঁতুল খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য যেমন খারাপ তেমনি আপনার দাঁতের জন্য ও খারাপ।
৫। পিত্তপাথর গঠনে সাহায্য করেঃ
ভারতীয় গবেষক প্রমাণ করেছেন যে, ঘন ঘন প্রচুর পরিমাণে তেঁতুল খাওয়া পিত্তপাথর হতে সাহায্য করে। এর ফলে জন্ডিস, তীব্র জ্বর, পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, পরিপাকের সমস্যা ও লিভারের সমস্যা হতে পারে।
৬। এসিড রিফ্লাক্স বৃদ্ধি করেঃ
তেঁতুল এসিডিক খাবার তাই এটি বেশি খেলে আমাদের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল নালীতে বিশেষ করে পাকস্থলীতে এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই যদি এসিড রিফ্লাক্সের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আপনার তেঁতুল খাওয়া থেকে দূরে থাকা উচিৎ।
৭. গর্ভবতি মা ও স্তন্য প্রদানকারি মায়েরদের ক্ষেত্রে তেতুল সেবন করা বিরত থাকা উচিৎ।
৮. যে কোন সার্জারি করার কমপক্ষে ১৫ দিন আগে তেতুল খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
এছাড়াও যদি রক্তনালীর সংকোচনের ঔষধ গ্রহণ করে থাকেন তাহলে তেঁতুল খাওয়া থেকে বিরিত থাকতে হবে। এটি রক্তনালীকে আরো সরু করে দিবে। ফলে রক্তপ্রবাহ কম হবে এবং রক্তনালী পুরোপুরি বন্ধও হতে পারে। নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিকের সাথে প্রতিক্রিয়া দেখায় তেঁতুল। যেহেতু ল্যাক্সেটিভ হিসেবে কাজ করে, তাই আপনি যদি ইতিমধ্যেই লেক্সেটিভ গ্রহণ করে থাকেন তাহলে তেঁতুল গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।
ভেষজগুণ : পাকা ফল হৃদরোগের জন্য উপকারী। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। তেঁতুলের সাথে রসুন মিশিয়ে খেলে রক্তের কোলস্টেরল কমে। নিয়মিত তেঁতুল খেলে প্যারালাইসিস রোগীর অনুভূতি ফিরে আসে। টারটারিক অ্যাসিড থাকায় হজমশক্তি বাড়ায়। তাই পেটফাঁপা ও কাশি দূর করতে পুরোনো তেঁতুল গুলে; সে সাথে পরিমাণমতো পানি, লবণ, গুড় অথবা চিনি মিশিয়ে খেতে হবে।
বুক ধড়ফড়, মাথা ঘুরানো, হাত-পা জালা, কোষ্ঠকাঠিন্য, আমাশয় ও ক্ষুধামন্দা নিরাময়ে বেশ কাজ করে। তেঁতুল অতিরিক্ত ফ্যাট বের করে প্রজননতন্ত্রের কাজ শক্তিশালী করে। ধুতরা, কচু এবং অ্যালকোহলের বিষাক্ততা নিরাময়ে তেঁতুলের শরবত বেশ কার্যকরী। গাছের পাতা ও ছাল অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল। তাই শরীরের ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি হাঁপানি, চোখ জ্বালাপোড়া এবং দাঁতব্যথা সারিয়ে তুলে। নিয়মিত ঘণ্টাখানিক হেঁটে ২৫-৩০ গ্রাম তেঁতুল খেলে হৃদপি-ে ব্লক হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
গর্ভাবস্থায় মায়েদের বমিবমিভাব দূর করে। কাঁচা তেঁতুল গরম করে আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে প্রলেপ দিলে ব্যথা সেরে যায়। মুখে ঘা হলে পানির সাথে তেঁতুল মিশিয়ে কুলকুচা করলে আরাম পাওয়া যায়। নিরাময়েও কাজ হয়। কোনো কোনো এলাকার মানুষ তেঁতুলপাতা বেঁটে, মরিচ ও লবণ মিশিয়ে বড়া বানিয়ে পান্তাভাতের সাথে খান। এতে শরীরে অনেক উপকারে আসে। কচি পাতায় প্রচুর পরিমাণে অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে। পাতার রস সর্দি, কাশি, প্রস্রাবের যন্ত্রণা, পাইলস, কৃমি ও চোখওঠা সারাতে সহায়তা করে। তেঁতুলের বিচিতে এক ধরনের অ্যানজাইম আছে, যা রক্তের চিনির মাত্রা কমায়। এতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়া এর গুঁড়া নিয়মিত খেলে পেটের আলসার ভালো হয়।
তেঁতুলের তৈরি শরবত খেতে অন্যরকম স্বাদ। অনেক রোগের মহৌষধ। শরবত বানানোর জন্য আধাকাপ পরিমাণ পানিতে কয়েক ঘণ্টা ভিজিয়ে গুলিয়ে নিতে হয়। এরপর ছাকুনি দিয়ে ছেঁকে, অন্য পাত্রে দেড় কাপ পানিতে পরিমাণমতো গুড় গুলিয়ে, সে মিশ্রণ মেশাতে হবে। সাথে থাকবে আয়োডিনযুক্ত লবণ। পরে আরো এক কাপ স্বাভাবিক কিংবা ঠাণ্ডা পানি। এভাবেই হয়ে যাবে ভেষজ শরবত। এরপর গ্লাসে ঢেলে রুচিমতো লেবুর রস দিয়ে নিজে খাওয়া এবং অন্যদের পরিবেশন।
তেঁতুলের পাতা দিয়ে ভেষজ কীটনাশক তৈরি করা যায়। এজন্য একটি পাত্রে এক লিটার পানির সাথে ১০x১২ গ্রাম শুকনো পাতা এক সপ্তাহ ভিজিয়ে রাখতে হয়। এরপর পাত্রটি ঢাকনা দিয়ে ১ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এবার ঢাকনা সরিয়ে ২/৩ টুকরা রঙিন পলিথিন দিয়ে এমনভাবে মুখ বন্ধ করতে হবে যেন ভেতরে বাতাস ঢুকতে না পারে। এভাবে এক সপ্তাহ রেখে দিতে হয়। এবার ছাকুনির সাহায্যে ছেঁকে নিলেই হয়ে যাবে ফসলের ক্ষতিকর পোকা মারার কীটনাশক। ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতি লিটার পানিতে ৫ মিলিলিটার ভেষজ কীটনাশক মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।
তেঁতুল ভারতীয় এবং এশিয়ান খাবার এই ফল ,এর পাতা, ফল, বীজ, ছাল, ডালপালা, শাখা এবং ফুল (প্রায় প্রতিটি অংশ) এর উচ্চতর চিকিৎসায় মান রয়েছে।