বৃক্ষগুলি ২০-৩০ ফুট উঁচু হয়, প্রতিটি যৌগিক পাতায় ৮-৯ জোড়া পত্রক থাকে পত্রদন্ড ৮-১২ ইঞ্চি লম্বা এবং পত্রকগুলো ২-৪ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়৷ কাঁচা ফল টক বা টক মিষ্টি হয়, তবে পাকলে টকভাব কমে আসে এবং মিষ্টি হয়ে যায়৷ ফলের বীজ কাঁটাযুক্ত৷ ৫-৭ বছরেই গাছ ফল দেয়৷ এই ফল কাঁচা ও পাকা রান্না করে বা আচার বানিয়ে খাওয়া যায়৷ ফল আগস্ট মাসে বাজারে আসে আর থাকে অক্টোবর পর্যন্ত৷
প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্য উপযোগী আমড়ার পুষ্টিগুণ
প্রোটিন এর নাম পরিমাণ
শর্করা ১৫ গ্রাম
প্রোটিন ১.১ গ্রাম
চর্বি ০.১ গ্রাম
ক্যালসিয়াম ৫৫ মিলিগ্রাম
আয়রন ৩.৯ মিলিগ্রাম
ক্যারোটিন ৮০০ মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন বি ১০.২৮ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি ৯২ মিলিগ্রাম
অন্যান্য খনিজ পদার্থ ০.৬ মিলিগ্রাম
খাদ্য শক্তি ৬৬ কিলোক্যালরি।
ফল ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ (প্রতি ১০০ গ্রাম আমড়ায় ২০ মিলিগ্রাম পাওয়া যায়)৷
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ওজন কমাতে সহায়তা করে৷
রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়৷
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট জাতীয় উপাদান থাকায় আমড়া বার্ধক্যকে প্রতিহত করে৷[৩]
আমড়াতে প্রচুর আয়রন থাকায় রক্তাল্পতা দূর করতে বেশ কার্যকর৷
আমড়া খেলে মুখের অরুচি ভাব দূর হয়৷
মুখের রুচি ফিরে আসায় ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়৷
বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে আমড়া উপকারী৷
রক্ত জমাট বাধার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে৷
সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে এটি বেশ উপকারী৷
হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।ডায়াটারি ফাইবার সমৃদ্ধ আমড়া খেলে হজমজনিত দূর হয়। এতে ভালো থাকে পাচনতন্ত্র।
আয়রন শরীরের জন্য অপরিহার্য একটি অত্যাবশ্যক মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ও রক্তাল্পতা এবং অন্যান্য রক্তের সমস্যা প্রতিরোধ করে। এছাড়া হিমোগ্লোবিন এবং মায়োগ্লোবিন তৈরি করতে সাহায্য করে আয়রন, যা শরীরের সমস্ত সিস্টেমে অক্সিজেন স্থানান্তর করে। আমড়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়।
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে আমড়ায়। হাড় ও দাঁতের রক্ষণাবেক্ষণসহ বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য ভিটামিন সি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদন উন্নত করতেও সাহায্য করে। এটি ত্বকে পাওয়া একটি প্রোটিন যা ত্বককে সুস্থ, দৃঢ় এবং বলিরেখা থেকে মুক্ত করে।
আমড়ায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে ফ্রি র্যাডিক্যালের কারণে সৃষ্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে।
আমড়ায় পাওয়া যায় থায়ামিন। থায়ামিন হলো গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিনগুলোর মধ্যে একটি। এটি শরীরে অনেকগুলো কার্য সম্পাদন করে। এর মধ্যে একটি হলো পেশী সংকোচন এবং স্নায়ু সংকেত সঞ্চালনে সহায়তা করার ক্ষমতা।
আমড়া বিভিন্ন ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। সর্দি-কাশি ও ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে আমড়ায় থাকা উপকারী সব উপাদান।
আমড়াকে বলা হয় রুচিবর্ধক ফল। এটি খেলে অরুচি দূর হয়।
স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে আমড়া। এটি রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল দূর করে।
ব্রণের প্রকোপ কমিয়ে ত্বকের জৌলুস বাড়ায় আমড়া। এতে থাকা ভিটামিন সি ত্বক উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।
আমড়ায় থাকা বিভিন্ন উপকারী উপাদান আমাদের স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করে।ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য পরিমাণমতো পুষ্টিকর খাবার গ্রহণেই রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। খাবারে টাটকা ফল রাখতে হবে। বিশেষ করে জাম্বুরা, আমড়া, পেয়ারা, কামরাঙা প্রভৃতি দৈনিক ১৫০-২৫০ গ্রাম পরিমাণ খাওয়া যেতে পারে।আমড়ায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা শরীরে মজুত থাকা অতিরিক্ত সোডিয়ামকে প্রস্রাবের মাধ্যমে দেহের বাইরে বের করে দিতে পারে। ফলে আমড়া খেলে অচিরেই ব্লাড প্রেশার কমবে। তাই যাঁরা কিছুতেই উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না, তাঁরা ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি আমড়া খেয়ে।