কুরআনের অন্যতম শক্তিশালী আয়াত হিসাবে বিবেচনা করা হয় কারণ কেউ যখন এটি পাঠ করে, তখন সে আল্লাহর মাহাত্ম্য নিশ্চিত করে বলে বিশ্বাস করা হয়। যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা এই আয়াতটি পাঠ করবে সে জ্বিন ও শয়তানদের অনিষ্ট থেকে আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকবে; এটি দৈনিক আদখার নামেও পরিচিত।মহাগ্রন্থ আল-কোরআন এমন ফজিলতপূর্ণ কিতাব, যার প্রতিটি অক্ষর পাঠে আছে সওয়াব। তবে কোরআনের বেশ কিছু আয়াত ও সুরা এমন আছে, যেগুলোর শ্রেষ্ঠত্ব ও মাহাত্ম্যের কথা রাসুলুল্লাহ (সা.) বিশেষভাবে ইরশাদ করেছেন। এমনই একটি আয়াতের নাম ‘আয়াতুল কুরসি’।
এই আয়াতটিকে রাসুলুল্লাহ (সা.) কোরআনের শ্রেষ্ঠ আয়াত হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
আয়াতুল কুরসির এমন ফজিলতের কারণ হলো, এই আয়াতে আল্লাহর একত্ববাদ বিষয়ে বর্ণনা ও তাঁর গুণবাচক ১০টি বাক্য রয়েছে। আর শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকার জন্যও এই আয়াত অত্যন্ত কার্যকর।আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এক রমজান মাসে জাকাতের সম্পদ পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব আমাকে দিয়েছিলেন। তখন দেখতে পেলাম একজন আগন্তুক সদকার মাল চুরি করছে। তখন আমি আগন্তুকের হাত ধরে ফেললাম এবং বললাম, আল্লাহর কসম, আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুলের কাছে নিয়ে যাব। তখন আগন্তুক বলল, আমি খুব অভাবী আর আমার অনেক প্রয়োজন।তার এ কথা শুনে দয়া করে তাকে ছেড়ে দিলাম। পরদিন সকালে রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, গতকাল তোমার অপরাধী কী করেছে? আমি জবাব দিলাম, হে আল্লাহর রাসুল, লোকটি অনেক অভাবী তাই তাকে দয়া করে ছেড়ে দিয়েছি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, অবশ্যই সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে আর সে আবার আসবে। পরদিন আমি আবার অপেক্ষা করতে লাগলাম। যখন সে আবারও চুরি করতে এলো।ইসলামী জীবন
আয়াতুল কুরসির ফজিলত ও বরকত
মুফতি আব্দুল্লাহ আল ফুআদ
আয়াতুল কুরসির ফজিলত ও বরকত
মহাগ্রন্থ আল-কোরআন এমন ফজিলতপূর্ণ কিতাব, যার প্রতিটি অক্ষর পাঠে আছে সওয়াব। তবে কোরআনের বেশ কিছু আয়াত ও সুরা এমন আছে, যেগুলোর শ্রেষ্ঠত্ব ও মাহাত্ম্যের কথা রাসুলুল্লাহ (সা.) বিশেষভাবে ইরশাদ করেছেন। এমনই একটি আয়াতের নাম ‘আয়াতুল কুরসি’।
এই আয়াতটিকে রাসুলুল্লাহ (সা.) কোরআনের শ্রেষ্ঠ আয়াত হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
উবাই বিন কাব (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) উবাই বিন কাবকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তোমার দৃষ্টিতে কোরআন মাজিদের কোন আয়াতটি সর্ব শ্রেষ্ঠ? তিনি বলেছিলেন, আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুআল হাইয়্যুল কাইয়্যুম তথা আয়াতুল কুরসি। তারপর রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজ হাত দিয়ে তাঁর বুকে মৃদু আঘাত করে বলেন, আবুল মুনজির! এই জ্ঞানের কারণে তোমাকে মোবারকবাদ। (মুসলিম, হাদিস : ১৩৯৬)
আয়াতুল কুরসির এমন ফজিলতের কারণ হলো, এই আয়াতে আল্লাহর একত্ববাদ বিষয়ে বর্ণনা ও তাঁর গুণবাচক ১০টি বাক্য রয়েছে। আর শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকার জন্যও এই আয়াত অত্যন্ত কার্যকর।
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এক রমজান মাসে জাকাতের সম্পদ পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব আমাকে দিয়েছিলেন। তখন দেখতে পেলাম একজন আগন্তুক সদকার মাল চুরি করছে। তখন আমি আগন্তুকের হাত ধরে ফেললাম এবং বললাম, আল্লাহর কসম, আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুলের কাছে নিয়ে যাব। তখন আগন্তুক বলল, আমি খুব অভাবী আর আমার অনেক প্রয়োজন।
তার এ কথা শুনে দয়া করে তাকে ছেড়ে দিলাম। পরদিন সকালে রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, গতকাল তোমার অপরাধী কী করেছে? আমি জবাব দিলাম, হে আল্লাহর রাসুল, লোকটি অনেক অভাবী তাই তাকে দয়া করে ছেড়ে দিয়েছি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, অবশ্যই সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে আর সে আবার আসবে। পরদিন আমি আবার অপেক্ষা করতে লাগলাম। যখন সে আবারও চুরি করতে এলো।
তখন তাকে পাকড়াও করে বললাম, এবার অবশ্যই আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুলের কাছে নিয়ে যাব। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দাও, আমি খুব অভাবী, আমার পরিবার আছে, আমি আর আসব না। তখন আমি তাকে দয়া করে এবারও ছেড়ে দিলাম। পরদিন আবারও রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, গতকাল তোমার অপরাধী কী করেছে? আমি এবারও জবাব দিলাম, হে আল্লাহর রাসুল, লোকটি অনেক অভাবী তাই তাকে দয়া করে ছেড়ে দিয়েছি। এবারও রাসুল (সা.) বললেন, অবশ্যই সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে আর সে আবার আসবে। তৃতীয় দিনও আমি চোরের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। যখন সে আবারও চুরি করতে এলো তখন তাকে পাকড়াও করে বললাম, এবার অবশ্যই আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুলের কাছে নিয়ে যাব, তুমি বারবার ওয়াদা করছ আর চুরি করতে আসছ। তখন (উপায়ন্তর না পেয়ে) সে বলল, আমাকে মাফ করে দাও। আমি তোমাকে এমন কিছু কথা বলে দেব, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাকে কল্যাণ দান করবেন। আমি বললাম, সেগুলো কী? তখন সে বলল, যখন ঘুমাতে যাবে তখন আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমাবে। তাহলে আল্লাহ তোমার জন্য একজন পাহারাদার নিযুক্ত করবেন যে তোমার সঙ্গে থাকবে আর কোনো শয়তান সকাল পর্যন্ত তোমার কাছে আসতে পারবে না। এটা শুনে আবু হুরায়রা (রা.) তাকে ছেড়ে দিলেন। পরদিন রাসুল (সা.) আবার অপরাধীর কথা জানতে চাইলে তিনি আগের রাতের কথা বলেন। তখন রাসুল (সা.) বলেন, যদিও সে চরম মিথ্যাবাদী; কিন্তু সে এই কথা সত্য বলেছে। রাসুল (সা.) আবু হুরায়রা (রা.)-কে আরো বলেন, তুমি কি জানো সে কে? আবু হুরায়রা (রা.) বললেন, না। রাসুল (সা.) বলেন, সে হচ্ছে শয়তান। (বুখারি, হাদিস: ২৩১১)
সুবহানাল্লাহ! পবিত্র কোরআনের এই আয়াতটি এতই বরকতপূর্ণ যে রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি নামাজের পর এই আয়াত পড়বে, সে তার জান্নাতে যেতে মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা থাকবে না।
আল্লাহ তাআলা আমাদের বেশি বেশি আয়াতুল কুরসি পাঠ করার তাওফিক দান করুন।