সালাম বিনিময়

আসসালামু আলাইকুম
সালাম মানেই শান্তি
সালাম মানে ৭০ নেকি
সালামের উওর দেওয়া মানে ১০ নেকি

আমার প্রায়ই লেখালেখি করার একটা অভ্যাস ফেসবুক থাকলে আমি টুকটাক যা দেখি, পড়ি, চিন্তা করি তাই লিখি। 

 

আজকে একটা জিনিস নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে অনেক বেশি খুশি হলাম। তাই ভাবলাম এই জিনিসটা আমার লেখা প্রয়োজন। 

আমাদের সমাজে সালাম দেয়ার প্রচলনটা অনেক কম। মোটামুটি চেষ্টা করি রাস্তায় মেয়ে মানুষ তাদেরকে সালাম দেওয়ার। 

 

 আমাদের বাড়ির গলির একটা চিপা রাস্তায় সব সময় ছোট কয়েকটা মেয়ে খেলাধুলা করে। 

প্রথম প্রথম আমি যখন ওইগলি দিয়ে যেতাম তাদেরকে আমি সালাম দিয়েছি। কিছুদিন পর থেকে দেখি সবাইএক হয়ে তারা আমাকে সালাম দেয়ার জন্য আগে চেষ্টা করে যাতে আমি আগে সালাম না দিয়ে ফেলি। 

 

সারাদিন প্রাইভেট পড়ানোর পর বিকালবেলা যখন আমি ওই রাস্তা দিয়ে আসি। আমার মনটা একটা সালামে একদম ফ্রেশ হয়ে যায়। সারাদিন ক্লান্তি একদম নাই হয়ে যায়। আমি যে টানা ৫ ঘন্টা পড়াইয়া আসলাম আমি ভুলেই যাই। 

 

এখান থেকে আমি বুঝতে পেরেছি আমরা যখন ছোট ছিলাম জেনারেল লাইনের মানুষ আমরা একজন বোরকা পরা মহিলাকে দেখলে বলতাম যে গলা কেটে নিয়ে যাবে, বাচ্চা ধরে নিয়ে যাবে। বোরকা পরা মহিলা দেখলে আমরা তো দশ হাত দূরে থাকতাম।  

 

কিন্তু একটা সালামে এই বাচ্চা গুলোর মধ্যে সেই ভয়টাকে একদম দূর করে আমার এত আপন করে তুলেছে মনে হয় তাদের আমি কতই না চেনা। আমি বাসায় ফেরার সময় আমাকে দেখলে সালাম দিবে সব বাচ্চারা চারিদিকে ঘেরাও করে জিজ্ঞেস করবে তুমি কেমন আছো। এটা আসলে অন্যরকম একটা ভালোলাগা এটা বলে প্রকাশ করা কখনোই সম্ভব না। তারা কিন্তু আমাকে কখনোই দেখেনি। দেখলে হয়তো বা কখনো চিনবেও না। 

 

আসলে আমরা নিজ নিজ জায়গা থেকে যদি একটু পরিবর্তন আনি একাই সবকিছু নিজে নিজে পরিবর্তন হতে শুরু করে দেয় আল্লাহর রহমতে। আল্লাহ তাআলা নিজে সহায়তা করেন তখন। 

 

আমার সারাদিনের ভিতরে আল্লাহ তায়ালা সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ নেয়ামত এটাকে মনে হয়।আল্লাহ তায়ালা আরো কত নেয়ামত দিয়ে আমাকে পরিপূর্ণ করেছেন যা বলে শেষ করা যাবেনা। আল্লাহ তালার নিকট কোটি কোটি হাজার হাজার শুকরিয়া আলহামদুলিল্লাহ।যে ব্যক্তি সালামের উত্তর দিতে অক্ষম তাকে সালাম দেয়া মাকরুহ। যথা, সালাত, আজান-ইকামত, জিকর , তিলাওয়াত, ধর্মীয় জ্ঞানচর্চা, খানাপিনা ও প্রস্রাবরত ব্যক্তিকে সালাম দেয়া, গুনাহের কাজে লিপ্ত ব্যক্তিকে সালাম দেয়া, স্ত্রী সহবাস ইত্যাদি অবস্থায় সালাম দেয়া মাকরুহসালাম ইসলামে সর্বোত্তম ও একমাত্র অভিবাদন। সালাম দেওয়া নেওয়া নবী-রাসুলদের সুন্নত। আল্লাহ তাআলা আদম (আ.)- কে সৃষ্টি করে সর্বপ্রথম সালামের শিক্ষা দেন।সালামের ফজিলতের বিষয়ে হাদিসে অনেক বর্ণনা এসেছে। পবিত্র কোরআনেও আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ করবে, তখন তোমরা তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম বলবে। এ হবে আল্লাহর নিকট হতে কল্যাণময় ও পবিত্র অভিবাদন।হজরত আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত। রাসুল সা. ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি আগে সালাম দিবে সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কাছে উত্তম ব্যক্তি।

আরেক আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যখন কেউ তোমাদের সালাম করে, তখন তোমরা তাকে তদপেক্ষাও উত্তম পন্থায় সালাম (জবাব) দিও কিংবা (অন্ততপক্ষে) সেই শব্দেই তার জবাব দিও। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছুর হিসাব রাখেন।’ - (সূরা নিসা, আয়াত, ৮৬)

 

এছাড়া আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে শিখিয়েছেন কেউ সালাম দিলে তার চেয়ে উত্তম শব্দে উত্তর দেয়া উচিত। বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমার কাছে ইবরাহিমের সম্মানিত মেহমানদের বৃত্তান্ত এসেছে কি? যখন তারা তার কাছে উপস্থিত হয়ে বলল, ’সালাম।’ উত্তরে সে বলল, ’সালাম।’ (সূরা যারিয়াত, আয়াত, ২৪-২৫)

 

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. থেকে বর্ণিত, ‘এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, ’সর্বোত্তম ইসলামী কাজ কী?’ তিনি বললেন, “(ক্ষুধার্তকে) অন্নদান করবে এবং পরিচিত-অপরিচিত নির্বিশেষে সকলকে (ব্যাপকভাবে) সালাম পেশ করবে।’ (বুখারী ৬২৩৬, মুসলিম ৩৯, তিরমিযী ১৮৫৫)

হজরত আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত। রাসুল সা. ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি আগে সালাম দিবে সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কাছে উত্তম ব্যক্তি। -

আমি আমার বাবাকে সালাম দিতে লজ্জা বোধকরতাম,হায় আফসোস এখন আমি ছোট বড় সবাইকে সালাম দিতাম কিন্তু নিজের বাবা মাকে সালাম দিতে কেনো লজ্জাবোধ করতাম।

আজ বাবা নেই আমি জেনো সব সময় মাকে সালাম দিতে পারি আল্লাহ তুমি আমাকে সে হেদায়েত দিও

আমিন।

আমিন সুম্মা আমিন।

 


Akhi Akter Mim

313 Blog posts

Comments