একটা অদ্ভুত বৃষ্টি প্রয়োজন। তোমার অপেক্ষায় চাতক পাখির মতো আমি যে তৃষ্ণার্ত হই।মাথায় সব এলোমেলো ভাবনার মরু ঝড় বয়।তোমার কথা ভেবে আমি যে অস্থিরতায় সময় অতিবাহিত করি। সব মিটিয়ে দেওয়ার জন্য একটা ঝুম বৃষ্টি প্রয়োজন, যেদিন তুমি চাইলেও অফিস যেতে পারবেনা,হাজারটা কাজ থাকলেও শুধু আমার সাথেই বেলকনিতে বসে চা খেতে ইচ্ছে করবে।বারান্দায় ঝুলানো ফুল গাছটা বেশি পানিতে মরে যাবে বলে যত্ন করতে ইচ্ছে হবে অথবা কিচেনের রান্নাকে ছুটি দিয়ে আমাকে জোর করে পাশের রাস্তায় টেনে নিয়ে বলবে চলো এই বৃষ্টিতে আমরা হেটে এই শহরের ধুলোর আস্তর ধুয়ে যাওয়া চকচকে শহরটা দেখি।তার পর কাক ভেজা হয়ে বাসায় ফিরে শর্দি জ্বর বাধিয়ে আরও ২ দিন অফিস ফাকি দিয়ে ঘরের কোনায় আরাম খুজবে।তোমার জ্বরের বাহানায় আমাকেও বলবে অফিস ছুটি নাওতো একটু কাছাকাছি বসো দেখতো কপালে হাত রেখে আরও ২ দিন ছুটি কি নিয়ে নিতে হবে কিনা?এমন একটা অদ্ভুত বৃষ্টি চাই।অফিস ফেরার পথে-হঠাৎ অপ্রস্তুত বৃষ্টি- কাঁক ভেজা- ওনার জন্য একটুকরো ভালোবাসার প্রতিকী ফুল- আর ওনার প্রিয় বিরিয়ানি পার্সেল সাথে ?
দুইটি ভেজা কাক বসে আছে নির্বাক আজ,
মুখোমুখি, কিন্তু কিছু বলার নেই তাদের।
বৃষ্টি ফোঁটার ছন্দে হারিয়ে যায় সব শব্দ,
জলের ধারা বেয়ে নামছে স্মৃতির আবেশ।
আকাশের নিচে, এই নীরবতা যেন কিছু বলতে চায়,
একটা গল্প, যা শোনার কেউ নেই।
তারা দেখে, হৃদয়ের গভীরে ভিজছে অসংখ্য মন,
কিন্তু এই ভেজা বিকেলে, সকল ব্যস্ততার নির্বাসন।
তাদের পালকে জমে থাকা জলের ফোঁটা,
মনে করিয়ে দেয়, হয়তো প্রতিটি ফোঁটা
একটা অসমাপ্ত গল্পের অংশ, অথবা
কোনো বিস্মৃত ভালোবাসার চিহ্ন।
জল ছুঁয়ে যায় জমিন, আকাশ, মন—
ভেজা কাকের চোখে তবু দেখা যায় নীরব ভাষা,
একটা সন্ধ্যা, একটা বিরহ, একটা চিরন্তন অপেক্ষা।??বৃষ্টি ভেজা কাক ভোরে
এক ঝলক তোমায় দেখা,
যেন তপ্ত গ্রীষ্মের মাঝে,
হঠাৎ বসন্তের ছোঁয়া।
রঙিন স্বপ্নেরা সব উঠছিল জেগে,
থমকে দাঁড়িয়ে পড়তাম
হঠাৎ তোমায় দেখে।
তুমি যখন মিশে যাচ্ছিলে,
আমার সকল সত্তা জুড়ে
তখন জানলাম,
তুমি অন্য কারুর!
তাই বলি,
তুমি এসো না আর
আমার এই ছননছাড়া জীবনে!
তোমার স্নিগ্ধ হাসির আবার অভ্যাস হয়ে যাবে।
তোমার কন্ঠস্বর শোনার ইচ্ছেরা পেয়ে বসবে,
আমি তো এই ভিড়েই ভালো আছি।
আর একাকীত্ব পেতে চাই না।
যেখানে যেমন আছো,
তেমন দূরেই থাকো না। ??বর্ষণের ছোঁয়ায় সিক্ত এক বিকাল,
বিকালও নয়, বিকাল আর সন্ধ্যার মাঝামাঝি
যেখানে আলোর ছায়া মিলিয়ে যায়,
তেমন এক সময়ে একা দাঁড়িয়ে আছি
আমি—একটা ভেজা কাকের মতোই একা।
বৃষ্টি ঝরে পড়ছে,
ঝরে পড়ছে আমার ভেতরেও,
ভেজা ডানা কাঁপছে কাকের,
আর আমার মন কাঁপছে নিঃশব্দে।
একাকীত্বের বেদনায়
আমরা দু’জনেই হয়তো সমান,
কিন্তু সে শুধু কাক,
আমি তো মানুষ—মুখোশ পরা
অভিমানী এক যুবক, একাকী।
এই পৃথিবীর গর্জন
আমাদের মুছে দেবে না,
আমরা দু’জনেই কালো,
আমরা দু’জনেই নীরবতা।
যতক্ষণ না থামে এই বর্ষণমুখর সন্ধ্যা,
ততক্ষণ আমরা দু’জনেই হয়তো একা—
একাকীত্বের ছোঁয়ায়,
অন্ধকারে মিলিয়ে যাবো।অপেক্ষা বোঝো?
সন্ধ্যার ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি যখন তীব্রতর হতে থাকে আর মানুষ টা রাস্তায় !
ঠিক মত এসে পৌঁছবে নাকি ,কাক ভেজা হয়ে বিরক্তি নিয়ে ফের চলে যাবে নাকি এই ভয়ে একান্তই পথের দিকে চেয়ে দেখা!দমকা বাতাস,ঝিরিঝিরি বৃষ্টি।মাংস খিচুড়ি খাওয়ার খুব ইচ্ছে হতে লাগলো।স্ত্রীকে কিভাবে বললে সে না করবে না ভাবতে লাগলাম।অবশেষে কল দিয়ে
" তোমায় খুব ভালোবাসি গো "
" অফিস টাইমে হঠাৎ এসব বলছো! "
" কেনো বলবো না?আমার বউকে আমি সবসময় ভালোবাসি বলবো।তাতে তোমার কি?"
" আমার আবার কি,আচ্ছা বলো "
" তুমি যে পৃথিবীর সবথেকে সুন্দর একটা মেয়ে, সেটা জানো?আমার ছোট্ট হরিণী "
স্ত্রী কিছুক্ষন হাসলো,হেসে বললো " এই আবহাওয়ায় মাংস,ভুনা খিচুড়ি খাবে বললেই হয়।দ্রুত কাজ শেষ করে আসো,আমি রেঁধে রাখবো "
বিকেলে ঝড়ো হাওয়া।কাক ভেজা হয়ে স্বামী উপস্থিত।মাথার জল মুছে দিতে দিতে বললাম " ইনিয়ে বিনিয়ে বলার দরকার কি ছিলো? সরাসরি বললে কি আমি রাঁধতাম না? "
" এমনিতেই এতো কাজ করো।তার উপর এসব আবদার করার সাহস পাচ্ছিলাম না "
" তোমার আবদার মেটানোর জন্যই তো এতোকিছু।বোকা ছেলে "
" একটা প্লেটে খাবার নিয়ে বারান্দায় চলো।এক প্লেটে খাবো,আমি খাইয়ে দিবো " ভাদ্র মাসের শেষের দিকে এই বৃষ্টি আসে এই যায়, প্রকৃতি ঘন ঘন রুপ বদলায়, হয়তো রৌদ্রময় দিন শুরু হয় আবার কাক ভেজা বৃষ্টিতে দিন শেষ হয়।