আলেম কাকে বলে? কাকে আলেম বলা যাবে আর কাকে আলেম বলা যাবে না

Comments · 1 Views

কাকে আলেম বলা যাবে আর কাকে আলেম বলা যাবে না। মুসলিম সভ্যতায় আলেম বলতে আসলে ঠিক কাকে বুঝানো হয়। এবং শেষের দিকে চ?

পবিত্র কোরআনে ইলমের প্রসঙ্গে দু'টি কথা এসেছে। ইলমকে ঈমানের অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। আল্লাহ বলেছেন, আপনি বলে দিন, যারা জানে আর যারা না জানে, তারা কী এক? ( সূরা যুমার, ৯। ) পাশাপাশি তাকওয়াকে আলেমদের মৌলিক বৈশিষ্ট্য বলা হয়েছে। আল্লাহ ইরশাদ করেন, তাকওয়া হচ্ছে আলেমদের মৌলিক বৈশিষ্ট্য। ( সূরা ফাতির, ২৮ ) ইবনে মাসউদ রাদিঃ এর সমর্থনে বলেন, বেশী জানাটাই মুখ্য বিষয় নয়, মুখ্য বিষয় হচ্ছে তাকওয়া। ( জামিউ বয়ানিল ইলমি ও ফাদলিহ)
এর থেকে মোটাদাগে দু'টি বিষয় বুঝা গেল। যাদের ঈমান নেই, তারা ধর্মীয় অর্থে আলেম হতে পারেন না। পাশাপাশি যাদের বাহ্যিক তাকওয়া নেই, যারা প্রকাশ্যে ফাসেক-ফুজ্জার-মন্দ কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকে, তাদেরকেও আলেম বলা যায় না। এই দুই মাপকাঠিতে অনেক বাদ পড়ে যাবেন। ফলে যারা প্রাচ্যবিদ বা ইসলাম জানলেও ব্যক্তিগত জীবনে ইসলাম পালন করেন না, তারা জ্ঞানী হতে পারেন, তবে আলেম না। কেননা বিশেষায়িত জ্ঞানীকেই আলেম বলা হয়।
**
আলেম উপাধিধারী হতে হলে কী অর্জন করতে হবে, সেই ব্যাখ্যায় যাবার আগে ইবনে রজব হাম্বলি রাঃ এর একটি উক্তি বর্ণনা করবো। তিনি বলেন, বেশী জানলে বা বেশী কথা বলতে পারলেই ইলম হয় না। ইলম মানে একটা বিশেষ নূর, যার মাধ্যমে বান্দা হক চিনতে পারে, হক-বাতিলের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে ও তাকে সংক্ষিপ্তভাবে প্রকাশ করতে পারে। ( ফাদলু ইলমিস সালাফ )
থানবি রাহঃ বলেন, ইলম গুনাহের মাধ্যমে শেষ হয়ে যায়, গুনাহগারের কখনো ইলম অর্জিত হয় না। যদি শুধু তথ্য জানাকে ইলম বলা যেত, তাহলে গুনাহ ও কুফুরের সংশ্লিষ্টতার সাথেও ইলম অর্জন হয়ে যেত। ইলম হচ্ছে একটা বিশেষ নূর—আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে নূর এবং স্পষ্ট কিতাব এসেছে। ( সূরা মায়েদা, ১৫) কেননা সাহাবায়ে কেরাম উম্মতের মধ্যে সবচেয়ে বড় আলেম ছিলেন, ইলমের ময়দানে আবু হানিফা রাহঃ এর অবদান অনেক বেশী, তবে খোঁজ নিলে দেখা যাবে, আবু হানিফাও খুব কম কিতাব পড়েছেন, তাহলে তারা বড় আলেম কীভাবে হলেন?
তাদের সেই নূর ও রুহানিয়াত অনেক বেশী ছিল। ইমাম শাফেয়ী রাহঃ তার শিক্ষক ওকী রাহঃ এর কাছে অভিযোগ করলেন, তার মুখস্ত শক্তি কম, তার শিক্ষক তাকে বললেন, তুমি গুনাহ ছেড়ে দাও। থানবি রাহঃ এই উক্তি উল্লেখ করে বলেন, গুনাহের কারণে পুথিগত জ্ঞানচর্চায় বিশেষ ক্ষতি হয় না, মুখস্তশক্তিতেও দুর্বলতা তৈরি হতে পারে না। অনেক মুত্তাকি মোমিন থেকে কাফের-ফাসেকের বেশী তথ্য ও জ্ঞান থাকতে পারে, বৈরুত ও জার্মানির প্রাচ্যবিদদের অনেকে কোরআন-হাদিস সম্পর্কে অনেক ভালো জানেন, তবুও তারা আলেম নন। কেননা তাদের কাছে ইলমের সেই নূর ও রুহানিয়াত নেই।
***
তবে মনে রাখা জরুরী, এই নূর ও রুহানিয়াতের মানে আধ্যাত্মিকতা নয়, এর জন্য মৌলিক তথ্যের জ্ঞান থাকাও জরুরী। ইবনুল কাইয়িম রাহঃ এর মতে আলেম মানে যিনি ফতোয়া দিতে পারেন, মাসায়েল অনুসন্ধান করতে পারেন ও হালাল-হারামের মৌলিক সূত্রাবলী জানেন। ( ইলামুল মুয়াক্কিঈন) ইবনুল কাইয়িম রাহঃ এখানে আলেম ও মুজতাহিদকে এক মাপকাঠিতে দেখেছেন। তাহলে ইজতেহাদের বৈশিষ্ট্য-ভাগবিভাগ নিয়ে আলোকপাত করা যাক।
ইজতেহাদের জন্য মৌলিকভাবে কয়েকটি শর্ত আছে। ক) আরবি ভাষা জানা। খ) কোরআন-সুনানের মৌলিক বিষয়াদি জানা। গ) ইজমা বা যেসব বিষয়ে ঐক্যমত আছে, সেগুলো জানা। ফিকাহের মৌলিক আলোচনা জানা। ঘ) উসুলুল ফিকাহ বা গবেষণা-অনুসন্ধান প্রক্রিয়া জানা। এখন, এগুলোর ভিত্তিতে ইসলামের মর্ম ব্যাখ্যায় কার চিন্তা কতটুকু মৌলিক, সে হিসেবে মুজতাহিদদের মধ্যে স্তরভেদ আছে।
সর্বশেষ স্তর হচ্ছে, যারা শুধু অনুসন্ধান করে পূর্বের মতামতের আলোকে বর্তমানকে ব্যাখ্যা করতে পারে। বলাই বাহুল্য, বর্তমানে প্রায় সবাই এই প্রকারের আলেমদের অন্তর্ভুক্ত। এই শর্তগুলো অনেক ব্যক্তির মধ্যে পাওয়া যায়, কেননা কোরআন-সুনান-ফিকাহ-উসুলে ফিকাহ-আরবি ভাষা বিষয়ে জানাশোনা থাকলে এই শর্তগুলো পাওয়া যাবে। নূর ও রুহানিয়াতের পাশাপাশি এই তথ্যগত সামর্থ্য থাকলে তাকে আলেম বলা যাবে।
****
আমাদের প্রচলিত ব্যবস্থায় উপমহাদেশে যারা দরসে নেজামি শেষ করেন, তাদেরকে আলেম বলা হয়— কেননা এই সিলেবাস শেষ করলে উল্লেখিত যোগ্যতাগুলো অর্জিত হয়। অক্সফোর্ডের গবেষক আকরাম নাদাবি ও ইউনিভার্সিটি অফ নটরডেম প্রফেসার ইবরাহিম মুসা দরসে নেজামির বিষয়ে লেখেছেন। যথাক্রমে তাদের বইয়ের নাম, Madrasah Life এবং What Is a Madrasa?। ইবরাহিম মুসার ব্যাখ্যা মতে, দরসে নেজামির সিলেবাস পশ্চিমা শিক্ষাব্যবস্থার হিসেবে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পাঠ্যক্রমের অবস্থান ও গুরুত্ব বহন করে।
কওমি ও আলিয়া মাদরাসায় নেজামি সিলেবাস পড়ানো হয়। তাহলে কি বলা যায়, যারা কওমি বা আলিয়া মাদরাসায় পড়া শেষ করেন, তারা আলেম? না, বলা যায় না। কেননা অধিকাংশ ছাত্র নেজামি সিলেবাসের দক্ষতা অর্জন করতে পারে না, ফলে আলেমও বলা যায় না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে পাঁচ থেকে আট ভাগ ছেলে এসব মৌলিক যোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হয়। এদেরকে আলেম বলতে হবে, বলা জরুরী। এখানে বলে রাখা ভালো, আমাদের সমাজে বাকি নব্বই ভাগ ছাত্রও আলেম হিসেবে পরিচিত। এটা আমাদের একটা বড় দুর্ভাগ্য। এই প্রশ্ন থেকে বাঁচার জন্য মাদরাসা প্রশাসন আলেম না বলে মাওলানা পরিভাষা ব্যবহার করে থাকে। এখানে আরও স্বচ্ছতা প্রয়োজন।
*****
তবে বাকি পাঁচ/আট ভাগকেও পশ্চিমা প্রভাবিত লোকদের অনেকে আলেম মানতে নারাজ। তাদের যুক্তি হচ্ছে, এই পাঁচ/ আট ভাগের প্রায় সবাই ক) পশ্চিমা জ্ঞানশাখা ও ভাষা জানেন না। খ) তাদের বক্তব্য আধুনিক সমাজের কমনসেন্সের সাথে যায় না। গ) তাদের মৌলিক গবেষণা ও অবদান নেই। ঘ) তারা সমাজকে পরিবর্তন করতে পারছেন না।
ক) ইসলামি জ্ঞানব্যবস্থা নিজে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ইসলাম ব্যাখ্যার জন্য ইসলামি জ্ঞানশাখার বাইরে অন্যকিছুর প্রয়োজন নেই। তবে আপনি যদি পশ্চিমা চিন্তার পর্যালোচনা করতে চান, তাহলে আপনার অবশ্যই মোটামুটি জানাশোনা লাগবে। ইমাম গাজালি রাহঃ গ্রীক দর্শনের সমালোচনা করার আগে নিজে গ্রীক দর্শন পড়ে নিয়েছেন। তবে তিনি জীবনের শেষ দিকে আরেকটি কিতাব লেখে যান, যেখানে তিনি বলেন, আমি চাই না সবাই গ্রীক দর্শন ও দর্শন বিরোধী পর্যালোচনা পড়ুক, কেননা খাদ্যের চেয়ে ওষুধ বেশী হয়ে গেলে সমস্যাই বেশী হবে।
কিছুদিন আগে ইয়াসির কাজি একটা সাক্ষাৎকারে বলেন, ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্দেশ্য ধর্মীয় আলেম তৈরি করা— তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের গবেষক তৈরি করা তাদের কাজ নয়। বরং তার মতে ইসলামি জ্ঞান অর্জন না করে পশ্চিমা সমাজ-মানবিক জ্ঞান শাখায় পড়াশোনা করলে বিভ্রান্তির প্রবল আশঙ্কা আছে। সন্দেহ নেই, কিছু সংখ্যক মানুষকে অবশ্যই পশ্চিমা চিন্তা-দর্শন পড়তে হবে, আমি নিজেও পড়ছি। তবে এটা আলেম হবার জন্য শর্ত না।
অনেকে মনে করেন, গবেষণা প্রকৌশল পশ্চিমাদের কাছ থেকে শিখতে হবে। এদের কেউই উসুলে ফিকাহ সম্পর্কে ধারণা রাখেন না। ধর্মীয় গবেষণায় উসুলে ফিকাহের কোন বিকল্প পশ্চিমা জ্ঞানশাখায় দেখাতে পারবেন? আরও কথা হচ্ছে, দেশে ইসলামিক স্টাডিজ ও আলিয়া মাদরাসা আছে, সেখানে পশ্চিমা জ্ঞান ও ভাষা শেখানো হয়। যদি নিছক পশ্চিমা জ্ঞান ও ভাষা শেখালেই ভালো আলেম হওয়া যেত, তাহলে আলিয়া ও ইসলামিক স্টাডিজ থেকে বেশী আলেম বের হতেন, বাস্তবতা হচ্ছে, ধর্মীয় জ্ঞানশাখাগুলোতে দক্ষতা অর্জন ছাড়া পশ্চিমা জ্ঞান ও ভাষা শিখেও লাভ নেই।
খ) আলেমদের অনেকের বক্তব্য ও বোঝাপড়া আধুনিক কমনসেন্সের সাথে যায় না, এটা সত্য। তবে এখানে আমার পর্যবেক্ষণ মতে মূল সমস্যা আমাদের লিবারেল ভেলুজ ও ব্যবস্থা। আলেমদেরকে লিবারেল বানালেই সমস্যার সমাধান হবে না। লিবারেলিজমের অন্তর্নিহিত ডবলষ্ট্যাণ্ডার্ড তথা সে লিবারেল বলে হিজাবও নিষিদ্ধ করে, আবার এলজিবিটি রাইটও দাবী করে। এই অন্তর্নিহিত প্রতারণার মীমাংসা ছাড়া আধুনিক কমনসেন্সের সাথে সমন্বয় সম্ভব নয়। সতর্কভাবে চেষ্টা করা যেতে পারে— যেমন এলজিবিটি রাইট ইস্যুতে ইয়াসির কাজিরা বক্তব্য রাখছেন। তবে এটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
আমাদের ঐতিহ্যবাদী ইলম ও আলেম ব্যবস্থা একটা আদর্শিক ইসলামি জগতের কল্পনায় তৈরি হয়েছে। বর্তমানে যতদূর ইসলাম বাস্তবায়ন সম্ভব, ততটুকু বাস্তবায়ন করা হবে — চর্চা ও স্বপ্ন পুষে রাখতে হবে। এটাই ঐতিহ্যবাদী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য। লিবারেল ব্যবস্থা ও বোঝাপড়ার সাথে সমন্বয় করার চেষ্টা করা যেতে পারে, তবে সেটা ব্যক্তিগত ও স্বতন্ত্র উদ্যোগ। লিবারেলিজমের উৎখাত ছাড়া সমাজে পরিপূর্ণভাবে ইসলাম বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। যারা ইলম ও আলেম ব্যবস্থাকে প্রাচীনপন্থী বা পশ্চাতপদ মনে করেন, তারাও কি লিবারেল ভেলকি ও দ্বৈততার সমাধান করতে পেরেছেন?
গ) বাংলাদেশে প্রচলিত ধর্মীয় শিক্ষা, চর্চা ও উৎপাদন শুরু হয়েছে ষাটের দশকের পরে। ব্যাপক উৎপাদনের শুরু আশির দশকে। ইমামতি, ফতোয়া ও ওয়াজের কাজগুলোকে আপনার ছোট মনে হতে পারে, তবে বাস্তবতা হচ্ছে, এগুলোর মাধ্যমেই দেশে ধর্ম প্রচার জারি আছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণার সাথে ধর্ম চর্চা ও প্রচারের কিছু পার্থক্য আছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় হয়তো আপনাকে একটা উদ্ভাবনের জন্য শ্রম ও মনোযোগ ব্যয় করতে হয়। ধর্মীয় চর্চা অনেকটা চিকিৎসকের দায়িত্বের মতো। প্রতিদিন পাঁচওয়াক্ত নামাজ, প্রতি বছর একই কিতাব বা ওয়াজ পড়িয়ে যেতে হয়। একজন চিকিৎসক বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের কথা ভাবেন না, ভাবেন চারপাশের মানুষদের স্বাস্থ্যগত প্রয়োজন পূর্ণ হোক। ঠিক তেমনি আলেমও ভাবেন মানুষ সাধারণ তালিম, তরবিয়াত ও তাবলীগের সাথে যুক্ত থাকুক।
এটা সত্য যে, বাংলাদেশে আলেমদের গবেষণার সংখ্যা আসলেই কম। তবে মৌলিক গবেষণা না থাকলে আলেম না, এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। গবেষণা না হওয়ার একটা বড় কারণ অর্থনৈতিক। কেননা সেই একই মাদরাসার ছেলেদের অনেকে এখন বিদেশে যাচ্ছেন ও গবেষণার সাথে যুক্ত হচ্ছেন। গবেষণার জন্য দরকার নিরিবিচ্ছিন্ন সময় ও সাহায্য। বাংলাদেশের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সেটার যোগান দিতে পারছে না। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে গবেষণার চাহিদাও কম। তাতে গবেষণার সুযোগ ও প্রণোদনা কমে যাচ্ছে। ব্যক্তিউদ্যোগে কেউ কেউ কাজ করলেও প্রাতিষ্ঠানিক বাঁধায় গবেষণা সংস্কৃতির চর্চা কম হচ্ছে।
ঘ) তারা সমাজকে পরিবর্তন করতে পারছেন না— এটা সত্য। আমাদের রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক ব্যবস্থায় জটিলতা এত বেশী যে, এখানে যে কেউ চাইলেই বড় রকমের সামাজিক পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব নয়। অবশ্য সমাজ পরিবর্তন করতে না পারলে আলেম নয়, এই ধারণাও সম্পূর্ণ ভুল। এর জন্য ইসলামে মুজাহিদ ও মুজাদ্দিদ বলে আলাদা দুটি পরিভাষা আছে।
মুজাহিদের পারিভাষিক অর্থ যোদ্ধা হলেও বড় রকমের রাজনৈতিক সংস্কারককেও মুজাহিদ বলার প্রচলন আছে। পাশাপাশি যিনি বড় রকমের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ঘটাবেন, তিনি মুজাদ্দিদ। মুজাদ্দিদ যে কেউ হয় না। প্রতি একশো বছরে একটা দেশে গুটিকয়েক মুজাদ্দিদ আসলে আসতে পারেন, এর সাথে আলেমকে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়।
******
ইলম হচ্ছে একটি বিশেষ নূর, এটা যে কারো অর্জন হয় না। ইখলাস ও তাকওয়া থাকলে অল্পকিছু জরুরী তথ্য জেনেও অনেক বড় খেদমত আঞ্জাম দেওয়া যায়। আলেম 'স্কলার', সোশ্যাল একটিভিস্ট, বিশেষ শ্রেণী বা গবেষক-আবিষ্কারকের প্রতিশব্দ নয়। এগুলো সহযোগী ও সংযুক্তি হিসেবে থাকতে পারে।
আলেমের মূল শর্ত ঐ রুহানিয়াত ও জরুরী কিছু তথ্য জানা। এর চেয়ে বেশী শর্ত যারা যোগ করেন, তারা আসলে আলেম শব্দের মধ্যে নিজের স্বার্থের অনুকূল কিছু বৈশিষ্ট্য ও বিষয় যোগ করতে চান। অথচ আলেম পরিভাষা লিবারেল একটিভিস্ট বা আবিষ্কারকের মতো নয়, আলেম হচ্ছেন রুহানি চিকিৎসক। আলেমের কাজ হচ্ছে —যেমন ইবনে রজব রাহঃ বলেছেন— হক-বাতিল আলাদা করতে পারা ও সেটা অল্প শব্দে বলার সক্ষমতা।
Comments
Read more