ইসমাইল আঃ

ইব্রাহিম আঃ এর ছেলে ইসমাইল আঃ এর জীবনী

আল্লাহপাক কোরআন মজিদে এই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে- আল্লাহর নবী হজরত ইবরাহিম (আ.) ছেলে ইসমাইলকে বললেন যে, ‘হে আমার প্রিয় বৎস! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি তোমাকে জবাই করছি। এ ব্যাপারে তোমার মতামত কী, ভেবে দেখ? ইসমাইল (আ.) সঙ্গে সঙ্গে বললেন, ইয়া আবাতিফ আল মা তু-মার, সাতাজিদুনি ইনশাআল্লাহু মিনাস সোয়াবেরিন।’ ‘আব্বাজান! যে আদেশ আপনার প্রতি এসেছে, তা আপনি কার্যকর করুন। আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের মধ্যে পাবেন, ইনশাআল্লাহ।’ যেমন বাবা তেমন ছেলে। কথায় বলে ‘বাপ কা বেটা’। ইনশাআল্লাহ-এর আক্ষরিক তরজমা ‘আল্লাহ যদি চান’। ইসমাইল (আ.) বরকত হাসিলের জন্যই আল্লাহর ইচ্ছার সঙ্গে নিজের মত ও সিদ্ধান্তকে যুক্ত করেছেন। অন্যথায় তার সিদ্ধান্তটি ছিল অবিচল। মনে কোনো সংশয় রেখে বলেননি যে, আল্লাহ যদি চান। এভাবে পিতাণ্ডপুত্র উভয়ে নিজেকে সমর্পণ করলেন।

 

‘ফালাম্মা আসলমা’- ‘অতঃপর তারা যখন আল্লাহর আদেশের সামনে মাথা নত করে দিলেন।’ ‘ওয়াতাল্লাহু লিল জাবিন’- ‘আর তাকে (ইসমাইলকে) শুইয়ে দিলেন (মাটির ওপরে) কপাল-পার্শ্ব রেখে।’ কপালের এক পার্শ্বকে বলা হয় জাবিন। অর্থাৎ কাত করে শোয়ালেন। এই দৃশ্য বড় হৃদয়বিদারক। তখন ইবরাহিম (আ.) বললেন, হে বৎস! তুমি আল্লাহর হুকুম পালনে আমার বড় সহায় হলে। অতঃপর ছেলে যা যা বললেন, ইবরাহিম আঞ্জাম দিলেন।

 

কোরআন মজিদ তার বর্ণনা দিয়েছে এভাবে- ‘ওয়া না-দাইনাহু আঁই ইয়া ইবরাহিম, ক্বাদ সাদ্দাকতার রু-য়া ইন্না কাজালিকা নাজজিল মুহসিনিন।’ ‘আমি তাকে ডাক দিয়ে বললাম, হে ইবরাহিম! তোমার স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করেছ। এভাবেই আমি আমার সত্যনিষ্ঠ বান্দাদের প্রতিদান দিয়ে থাকি।’ ইবরাহিম (আ.) মাথা তুলে চোখের বাঁধন খুলে দেখলেন, পাহাড়ের ওপর থেকে একটি দুম্বা নেমে আসছে, দেখতে হৃষ্টপুষ্ট। অন্তত চল্লিশ বসন্ত বেহেশতের চারণভূমিতে বিচরণ করেছে। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এই দুম্বা ছিল হজরত আদম (আ.) এর ছেলে হাবিলের দেওয়া কোরবানি, যা আল্লাহর দরবারে কবুল হয়েছিল। জান্নাত কাননে তা পালিত হয়েছে। এজন্য আল্লাহপাক একে ‘জিবহিন আজিম’ মহা মর্যাদাবান কোরবানি বলে অভিহিত করেছেন।

 

জিবরাইল (আ.) বললেন, এই দুম্বা আপনার ছেলের পরিবর্তে উৎসর্গিত। ইসমাইলের পরিবর্তে এটি জবাই করেন। তখন জিবরাইল (আ.) তাকবির ধ্বনি দিলেন, ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার’। ইবরাহিম (আ.) তাকে অনুসরণ করে বললেন, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার’। সঙ্গে সঙ্গে ইসমাইল (আ.) ও বললেন, ‘আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লা হিল হামদ’। এই তাকবির নিয়মে পরিণত হয় ঈদের দিনগুলোতে ও হজের সময়ের জন্য। (তাফসিরে কাশফুল আসরার অষ্টম খণ্ড : পৃ. ২৯৩)।


Akhi Akter Mim

313 Blog posts

Comments