হযরত হুদ (আঃ) এর জীবনী।
হযরত হুদ (আঃ) আদ জাতির নিকট প্রেরিত হল। আদ ছিল হযরত নূহ (আঃ) এর চার অধস্তন পুরুষ।
হযরত নূহ (আঃ)-এর পুত্র সাম। সামের পুত্র ইরাম। ইরামের পুত্র আউস।
আউসের পুত্র আদ। সামের আর এক পুত্র ছিল তার নাম ছিল আবির।
আবিরের পুত্রের নাম ছিল ছামুদ। আদ ও ছামুদের বংশাবলী ক্রমশ বিস্তৃতি লাভ করে।
পরবর্তী সময় আদ ও ছামুদের নামে তাদের বংশাবলীর নাম করন করা হয়। কওমে আদ ও কওমে ছামুদ। পবিত্র মেরাজে আদ ও ছামুদ সম্প্রদায়ের প্রতি আল্লাহর নির্দেশাবলীর কথা উল্লেখ আছে।
কওমে আদ পারস্য উপসাগরের অববাহিকায় অবস্থিত ওমান থেকে লোহিত সাগরের প্রান্তে হাজরামাউত ও ইয়েমেন পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় কয়েকশত বছর আধিপত্য বিস্তার করেছিল।
তারা চার দেবতার পূজা অর্চনা করত। এক নম্বরের দেবতার নাম ছিল সাকীয়া। যাকে তারা বৃষ্টি দানকারী, ফসল দানকারী ও অর্থ দানকারী দেবতা বলে শ্রদ্ধা করত। দ্বিতীয় হল হাফিজা যাকে বিপদ মুক্তি, রোগ মুক্তি ও অমঙ্গল থেকে মুক্তি দানকারী বলে বিশ্বাস করত। তিন নম্বরে ছিল রাদিকা।
এ দেবতাকে তারা অন্নদানকারী, শান্তি দানকারী ও পরকালের মুক্তি দানকারী দেবতা বলে সন্মান করত। চতুর্থ ছালীমা যাকে স্বাস্থ্য দানকারী, শক্তি দানকারী এবং যুদ্ধে বিজয় দানকারী বলে মনে করে তারা এ দেবতার পূজা করত।
আল্লাহ তা’য়ালা হযরত হুদ (আঃ)-কে এ আদ জাতির হেদায়েতের জন্য তাদের নিকট নবী হিসেবে প্রেরন করেন। হযরত হুদ (আঃ) ছিলেন আদ বংশীয় লোক।
আল্লাহ তা’য়ালা পবিত্র কোরআনে একথা উল্লেখ করেন। তিনি কওমকে যখন হেদায়েতের দাওয়াত দিলেন তখন তারা নবীর কথা শুনে ঠাট্রা বিদ্রুপ আরম্ভ করে দিল।
তারা নবীকে বলল, তুমি আল্লাহর বিশেষ দূত হিসেবে আমাদের হেদায়েত করতে এসেছ তার প্রমান কি? যদি তুমি নবী হও তাহলে উপযুক্ত প্রমান দাও। নবী তাদেরকে বললেন, আল্লাহ তা’য়ালা মানব জাতির মুক্তি ও কল্যাণের নিমিত্তে যুগে যুগে নবী রাসূলদেরকে প্রেরন করে থাকেন।
তাঁদের কাজে ও কথায় কোন ব্যক্তিগত স্বার্থ থাকে না। আল্লাহ তা’য়ালার প্রদত্ত দায়িত্ব পালন করাই তাঁদের প্রধান কর্তব্য। যখন কোন কওম নৈতিকতা ও ধর্মের ক্ষেত্রে অমনোযোগী হয়ে পড়ে এবং চরম উশৃংখলতার অনুসারী হয় তখন সে কওম ও জাতির পথের দিশা হিসেবে নবীগণের আবির্ভাব ঘটে।
তখন জাতি তার প্রতি আত্মস্মার্পণ করে দ্বীনে হক কবুল করলে আল্লাহ জাতিকে নাজাত দেন। তাঁদের তারাক্কিদান করেন। আর যদি তারা নবীর নাফরমান হিসেবে জীবন-যাপন শুরু করে তবে তাঁদের প্রতি আল্লাহর প্রকাশ্য গজব অবতীর্ণ হয়।
অতএব তোমরা যদি স্বাভাবিক ভাবে আল্লাহর প্রতি ঈমান আন এবং দেবদেবীর পূজা-অর্চনা ছেড়ে দাও তাহলে তোমাদের সর্বত্র মঙ্গল হবে, না হয় তোমাদের উপর কঠিন আজাব আসবে, যাতে তোমরা ধ্বংস হবে। তোমাদের কোন অস্তিত্ব পৃথিবীর বুকে অবশিষ্ট থাকবে না।
কওমে আদ নবীর নছিহত শুনে বলত আসুক আজাব, আমরা সে আজাবের ভয় করি না। আমরা শরীরে শক্তি রাখি। আজাবের মোকাবেলা করার শক্তি আমাদের আছে। তবুও আমরা আমাদের পূর্ব পুরুষের ধর্ম পরিত্যাগ করব না।
আমরা এসব দেব-দেবীর পূজা অর্চনা করে অনেক উপকার পেয়েছি, ধন সম্পদ ও স্বাস্থ্যের অধিকারী হয়েছি। আমাদের জন্য নতুন ধর্ম গ্রহন করা কোনক্রমে সম্ভব নয়।
আদ জাতির লোকেরা ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী ও দীর্ঘকায়। তাঁদের মধ্যে উর্দ্ধে চারশ গজ পর্যন্ত লম্বা মানুষ ছিল। আর বেঁটেদের উচ্চতা ছিল সত্তর গজ। তারা দুই তিন জনে একত্রিত হয়ে ছোট ছোট পাহাড় উল্টিয়ে ফেলতে পারত।
পাহাড়ের উপরে দাঁড়িয়ে যদি পা দিয়ে আঘাত করত তাহলে পাথরের মধ্যে পা গেড়ে যেত। যে কোন গাছপালা উপড়িয়ে ফেলা ছিল অত্যন্ত সহজ কাজ। তারা সেচ দ্বারা কৃষি কাজ করত।
এ জন্য পানি রক্ষণের উদ্দেশ্যে তারা নদীর ন্যায় বড় বড় জলাশয় তৈরি করে রাখত। বর্ষা মৌসুমে সেখানে পানি জমা হত। সারা বছর সে পানি সেচ করে কৃষি কাজ করত। তখনকার দিনে আল্লাহ তা’য়ালা অল্প দিনে ক্ষেত খামারে বহুগুণ ফসল দান করতেন।
ক্ষেতে গমবীজ বপন করলে পনের দিনের মধ্যে গম পেকে যেত। আঙুর, বেদানা, আনার, আপেল, ইত্যাদি জাতের ফলের গাছ রোপণ করার দুইতিন মাস পরেই পাকা ফল পাওয়া যেত। মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল খুবই সচ্ছল। কোন অভাব অভিযোগ তাদের ছিল না। শারীরিক অবস্থা ছিল খুবই ভাল। রোগব্যাধি আদৌ ছিল না বললেই চলে।
কওমে আদ যখন নবীর দাওয়াত অগ্রাহ্য করল তখন নবী তাদের জন্য বদদোয়া করলেন। আল্লাহ তা’য়ালা নবীর বদদোয়া কবুল করে একাধারে তিন বছর যাবত বৃষ্টি বন্ধ করে দিলেন। এতে তাদের তৈরি করা সমস্ত ঝিল, নদী, শুকিয়ে গেল, ফলে ফসল উৎপাদন বন্ধ হল। তখন জাতির উপর নেমে আসল ভীষণ দুর্ভিক্ষ।
অনাহারে, অর্ধাহারে মানুষ দিন কাটাতে লাগল। বড় বড় পালোয়ানদের শরীরের শক্তি হ্রাস পেল। রাস্তাঘাটে মানুষের লাশ পড়ে থাকতে দেখা গেল।
বৃদ্ধা ও শিশুরা অধিক হারে মৃত্যু বরণ করতে লাগল। সারা দেশময় ভীষণ হাহাকার আরম্ভ হয়ে গেল। মানুষ গাছের পাতা ও অখাদ্য কুখাদ্য খেয়ে জীবন ধারণের চেষ্টা আরম্ভ করল।
আদ জাতির মধ্যে সত্তরটি গোত্র ছিল। এ সত্তরটি গোত্রের মোট লোকসংখ্যা ছিল লক্ষাধিক। তাদের মধ্য থেকে মাত্র সত্তর জন মানুষ নবীর দাওয়াত কবুল করে মেহমান হয়েছিল।
এ সত্তর ব্যক্তি একদিন নবীর নিকট আরজ করে বলল, হে আল্লাহর নবী! দেশব্যাপী যেভাবে দুর্ভিক্ষের করাল ছায়া নেমে আসছে তাতে আমরা ও আমাদের আপনজনেরা কেউ রেহাই পাব বলে মনে হয় না।
অতএব আপনি দোয়া করুন, আল্লাহ তা’য়ালা যেন এবারের জন্য এ গজব সত্বর উঠিয়ে নেন। আমরা জাতিকে হেদায়েতের পথে আনার জন্য আর একবার আপ্রাণ চেষ্টা করে দেখব। নবী উম্মতের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন।
আল্লাহ তা’য়ালা নবীর দোয়া কবুল করে বৃষ্টি দিয়ে পুনরায় ফসল উৎপাদনের ব্যবস্থা করলেন। যাতে করে দেশের সকল মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ত্যাগ করে সুখে স্বাচ্ছন্দে জীবন-যাপন করতে আরম্ভ করে। নবী তাদের নিকট দ্বীনের দাওয়াত পেশ করলে তারা পূর্বের ন্যায় নবীর প্রতি দুর্ব্যবহার করে এবং পরিষ্কার ভাবে বলে দেয় যে, তারা কোন দিনই তার দাওয়াত গ্রহন করবে না।
নবী বার বার তাদের নিকট দাওয়াত পেশ করেন এবং আল্লাহর আজাবের ভীতি প্রদর্শন করেন। কিন্তু তারা কোন ক্রমে নবীর প্রতি ঈমান আনল না। বরং কওমে আদের কতিপয় লোক নবীকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হল। তারা কথাবার্তা ও আলাপ ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের উদ্দেশ্য অনেকটা প্রকাশ করল। নবী তাদের আচার আচারন দেখে আল্লাহর দরবারে আশ্রয় প্রার্থনা করলেন।
আল্লাহ তা’য়ালার তরফ থেকে নবীকে জানিয়ে দেয়া হল, হে নবী! আপনি আপনার সত্তর জন উম্মতকে নিয়ে শহর থেকে বেরিয়ে যান এবং পাহাড়ের এক গুহায় গিয়ে আশ্রয় নিন। আমি অতি শীঘ্রই কওমে আদের উপর ঝড় ও বন্যার আজাব প্রেরণ করছি।
নবী কওমের নিকট একবার জানিয়ে দিলেন, কওমের লোকেরা নবীর কথায় আস্থাবান হল না। তারা বলল, হে হুদ (আঃ)! তোমার আল্লাহ ও ঝড় বন্যার আজাব পাঠিয়ে আমাদেরকে দুর্বল করতে পারবে না। আমরা সে কৌশল ঠিক করে রেখেছি।
এখন তুমি যদি আমাদের আজাব থেকে রক্ষা পেতে চাও তাহলে নবুয়তীর দাবী ত্যাগ করে নির্বিঘ্নে আমাদের মাঝে বসবাস কর। না হয় অতি সত্তর শহর ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যাও। আগামী দিন যেন তোমাদেরকে আমরা এ শহরে আর না দেখি।
নবী আল্লাহ তা’য়ালার নির্দেশ অনুসারে তার উম্মতগণকে নিয়ে শহর ত্যাগ করলেন। দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে তিনি পার্বত্য এলাকায় গিয়ে পৌঁছেন। সেখানে তিনি চতুর্দিকে দেখাশুনা করে সর্বশেষে এক গুহায় ঢুকে আশ্রয় নিলেন।
নবীর উপর অত্যাচার আল্লাহ কখনই সহ্য করেন না। তাই তিনি কওমে আদের কার্যকালাপের জন্য তাদের উপর গজব চাপিয়ে দিলেন। আল্লাহ তা’য়ালা ফেরেস্তাদিগকে হুকুম দিলেন, কিয়ামতের দিন সিঙ্গা ফুঁকে সৃষ্ট ঝড়ের সামান্য নমুনা কওমের উপর ছেড়ে দাও।
ফেরেস্তাগন আল্লাহ তা’য়ালার এ হুকুম পেয়ে সেজদায় পড়ে কান্না কাটি আরম্ভ করলেন এবং বিনয়ের সঙ্গে বললেন, হে পরোয়ারদেগার!
আপনি যতটুকু বাতাস প্রবাহের আদেশ দিয়েছেন তাতে পৃথিবীতে মুহূর্তের মধ্যে কয়েক লক্ষ বার প্রলয় ঘটে যাবে। কারণ এখন পৃথিবী অত্যন্ত ছোট। কিয়ামতের দিন পৃথিবীকে অনেক বড় করা হবে।
তখন সিঙ্গা সুরের প্রবল বাতাস সহ্য করার মত যোগ্যতা প্রদান করা হবে পৃথিবীকে। কিন্তু আজকের পৃথিবী উহার লক্ষ ভাগের এক ভাগ সহ্য করার ক্ষমতা রাখে না। অতএব আপনি দয়া করে এ সংকট আসান করে দিন।
ফেরেস্তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তা’য়ালা একটি গরুর নিশ্বাসের বরাবর বাতাস প্রবাহের আদেশ দিলেন। তখন সমস্ত আম্বিয়াদের রুহ একত্রিত হয়ে আল্লাহ তা’য়ালার দরবারে আরজ করে বললেন, হে রহমান রহিম! আপনি যতটুকু বাতাস প্রবাহের আদেশ দিয়েছেন তাতে সমগ্র পৃথিবী একটি জড়পিণ্ডে পরিণত হয়ে যাবে।
সেখানে কোন আলো-বাতাস, পাহাড়-পর্বত, নদ নদী কিছুই থাকবে না। সম্পূর্ণ পৃথিবীটা শক্ত একটি পাথরে রুপ নিবে। সেখানে আর কোন দিন কোন প্রাণী বেঁচে থাকতে পারবে না। অতএব আপনি এ আজাবের আদেশ শিথিল করে দিন। আম্বিয়াদের দোয়া কবুল করে আল্লাহ তা’য়ালা আদেশ দিলেন সুচাগ্র পরিমাণ বাতাস প্রবাহ করে দেয়া হোক।
ফেরেস্তাগন আল্লাহ তা’য়ালার শেষোক্ত আদেশ কার্যকারী করার লক্ষ্যে সাতদিন পূর্বে আকাশে লাল, কাল, হলুদ রঙের মেঘের সমাবেশ করলেন।
প্রবাহিত নদ-নদীর পানি স্থির করে দিলেন। চলমান সাধারণ বাতাসের গতি রুদ্ধ করলেন। এ অবস্থা দেখে কওমে আদের লোকেরা বিশ্বাস করল যে আল্লাহর আজাব অতি সন্নিকটে। তখন তারা স্ত্রী, পুত্র পরিজন নিয়ে বিভিন্ন পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিল।
যখন আর সময় অতিবাহিত হল তখন তারা সারা পৃথিবী অন্ধকারাচ্ছন্ন দেখতে পেল। কওমে আদ এ অবস্থা দেখে কিছুটা ভীত হল এবং তারা পাহাড়ি এলাকায় গিয়ে নিজ স্ত্রী-পুত্রদেরকে মাঝখানে রেখে চতুর্দিকে যুবকেরা বেরিকেট সৃষ্টি করে দাঁড়াল। তারপর পা দিয়ে পাথরের উপর বার বার আঘাত করে করে হাঁটু পর্যন্ত গেড়ে দাঁড়াল যাতে কোন বাতাসে যেন তাদেরকে স্থানচ্যূত করতে না পারে।
নির্দিষ্ট দিনে আল্লাহর আজাব জমিনে পৌঁছল। প্রবল ঝড় আরম্ভ হল। গাছ পালা, ঘর-বাড়ি প্রথমেই নিঃশেষ হয়ে গেল। তার পড়ে উঁচু উঁচু পাহাড় গুলো ভেঙ্গে ভেঙ্গে আকাশে উড়তে আরম্ভ করল। তাতে সমস্ত গুহার আবরন ও ছাদ ধ্বংস হয়ে গেল।
ফলে বাতাস মানুষগুলোকে আকাশে উড়িয়ে নিয়ে গেল এবং সেখানে এক জনের সাথে অন্য জনের প্রবল আঘাত দিয়ে ধ্বংস করে দিল। তিন দিন পর্যন্ত মানুষ, গাছ ও পাহাড় শুধু বাতাসের উপর ভেসে ভেসে একে অপরকে প্রচণ্ডভাবে আঘাত করেছিল।
তিন দিন পরে ঝড় থেমে গেল। তখন আকাশ থেকে মানুষের লাশ, গাছ ও পাহাড়ের ভগ্নাংশ মাটিতে পতিত হল। মানুষের লাশগুলো দেখতে উপড়ানো শিকড়যুক্ত খেজুর গাছের ন্যায় এলোমেলোভাবে যেখানে সেখানে পড়ে ছিল। পবিত্র কোরআনে দৃশটি এভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বাতাস প্রবাহে নাস্তিক ও ধর্মদ্রোহীদের দল প্রায় সবই ধ্বংস হয়ে গেল। যারা নবীর উপর কিছুটা আস্থাশীল ছিল তারা অধিকাংশই রক্ষা পেল। কথিত আছে একদল ঈমানদার ব্যক্তি ঐ সময় উক্ত এলাকায় এমনভাবে নিরাপদে ছিলেন তারা কিছুই জানতে পারেনি।
তাদের কাপড়ের আঁচল পর্যন্ত বাতাসে উড়ে নি। তিন দিন পরে যখন নবী কওমের নিকট ফিরে আসলেন তখন জীবিত উম্মতেরা সারা দেশের পরিস্থিতি ও দৃশ্য দেখে অবাক হল।
তারা আর কাল বিলম্ব না করে নবীর নিকট দ্বীনের পরিপূর্ণ ছবক গ্রহন করলেন। এ ছবক যারা গ্রহন করেছিল তারা খাটি ঈমানদার হিসেবে পৃথিবীর বুকে ইসলামী রাষ্ট্র পর্যন্ত কায়েম করতে সক্ষম হয়েছিল।
হযরত হুদ (আঃ)-এর ইন্তেকালের পরে একশত বছর পর্যন্ত এ ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম ছিল। হযরত হুদ (আঃ) চারশত বছর জীবিত থেকে কওমকে হেদায়েত করেছেন। হযরত হুদ (আঃ)-এর
ইন্তেকালের পরে কয়েক লক্ষ মানুষ তার জানাজা নামায আদায় করে পরম ভক্তিসহকারে তার দাফন কার্য সম্পন্ন করেন। হযরত হুদ (আঃ) নবুয়তীর দায়িত্ব পালনে যতখানি সফলতা লাভ করেছিলেন তা নজির বিহীন।
বিনা যুদ্ধে ও বিনা রক্তপাতে এতখানি সফলতা অর্জন করা অন্য কোন নবীর জীবনে দেখা যায় নি।