আচ্ছা সোহাগ আমরা আজকে কলেজে আসছি কেনো আমাদের না পরিক্ষা শেষ । (আমি)
:-হুমমম । (সোহাগ)
:-তাহলে কলেজে কি করছি চল মন্টু মামার দোকানে গিয়ে ক্যারাম খেলি ।(আমি)
:-ওই সব সময় ফাইজলামি করবি না এমনিতেই খুব টেনশনে আছি । (সোহাগ)
:-কেনো রে তোর জিএফ কি কারও সাথে পলাইছে । চিন্তা করিস না ওই দেখ যে মেয়েটাকে দেখছিস কত সুন্দর ওইটার সাথে তোরে লাইন করাই দিমু চল । (আমি)
:-দেখ পারভেজ ফালতু কথা বাদ দিয়ে একটু চুপ করবি । (সোহাগ)
:-আমি আবার কি করলাম । আচ্ছা কলেজে এসেছি কেনো সেটা তো বললি না । (আমি)
:- মজা করস আমার সাথে জানোস না আজকে কেনো কলেজে আসছি । (সোহাগ)
:-নাতো ওহ্ মনে পড়ছে আজকে তো আমাদের পরিক্ষার ফলাফল দিবে । তা কয়টা বস্তা আনছোস ফল কুড়িয়ে নেওয়ার জন্য । (আমি)
:-দেখ পারভেজ সব সময় কিন্তু ফাইজলামি ভালো লাগে না আমি চিন্তা করতেছি রেজাল্ট নিয়ে আর তুই লাফাইতাছোস তোর কি ভয় নেই যদি ফেল করিস । (সোহাগ)
:-আরে কিসের ভয় দেখবি আমিই ফাস্ট হবো । (আমি)
:-থাক আর চাপা মারিস না । (সোহাগ)
:-চাপা না যদি আমি ফাস্ট হয় তাহলে কি দিবি । (আমি)
:-তুই যা চাইবি তাই । (সোহাগ)
:-মনে থাকে যেনো । (আমি)
মুখের উপর তো কইয়া দিছি ফাস্ট হমু তবে আমি জানি ফেইল কইরা বসে আছি তাই একটু ভাব লইলাম আরকি ।
:-রেজাল্ট দিবো সেটা নিয়ে আমি কোনো চিন্তা করছি না কিন্তু তুই এতো ভয় পাচ্ছিস কেনো । (আমি)
:-ভাই একটু তো চুপ থাক । (সোহাগ)
:-আচ্ছা কোন ভার্সিটিতে ভর্তি হবি । (আমি সোহাগের কাঁধে হাত দিয়ে)
:-আগে পাশ করি তারপর চিন্তা করবো । (সোহাগ)
:-আরে এতো চিন্তা করার কি আছে । আর তাছাড়া পড়ালেখা করে কি হবে আর শোন পড়ালেখা করে যে গাড়ির তলে পড়ে সে । (আমি)
:-ভাই একটু তো মুখটা বন্ধ রাখ । (সোহাগ)
:-কেনো বিশ্বাস হচ্ছে না আমার কথা । আচ্ছা ধর তুই ভালো গাড়ি চালাইতে পারোস এখন তোরে কেউ ড্রাইভার হিসেবে কেউ চাকরি দিলো তাহলে তো তুই গাড়িতে চড়তে পারলি । আর ধর তুই পড়ালেখা শেষ করে চাকরি খুজাছোস কিন্তু পাচ্ছিস না এমনকি একদিন হতাশ হয়ে রাস্তা পার হবার সময় দেখবি তুই গাড়ির তলে পইরা মইরা গেছোস । তাই পড়ালেখা না করে একটু গাড়ি চালানো শিখে রাখিস । (আমি)
:-ভাই তোর দুইটা পা ধরি এখন তো একটু চুপ থাক । (সোহাগ)
:-আরে পা ধরতে হবে না তোকে দোয়া করেদিলাম দেখবি তুই পাশ । (আমি সোহাগের মাথায় হাঁত রেখে)
আমার কথা শুনে সোহাগ আর কোনো কিছু না বলে দিলো দৌড় এক দৌড়ে মাঠের ওইপাশে । আমি দেখেই হাঁসতে হাঁসতে শেষ কারণ দৌড়োবার সময় দুইবার উপুর হইয়া পড়ছে । কিছুক্ষন পর পরিক্ষার রেজাল্ট দিছে । আমি তো আমারটা দেখে যেনো নিজেও বিশ্বাস করতে পারছি না । সোহাগরে চ্যালেন্জ করছিলাম আল্লাহ্ মনে হয় সেটা কবুল কইরা নিছে । আমি তো সোহাগরে খুজতাছি কই গেলো হারামী কইছিলো যা চাইমু তাই দিবো । কই যে গেলো ওইতো গাছের পিছনে পলাইয়া আছে ।
:-কিরে মামু কি মনে করছোস আমার কাছ থেকে পালাইতে পারবি মনে আছে তো যা চামু তাই দিবি । (আমি)
:-আচ্ছা বল কি চাস । (সোহাগ ভয় পাচ্ছে হয়তো )
:-বেশি কিছু না আমি শুধু তোর জিএফ মিম এর সাথে........(আমি)
:-ভাই তুই আমার হৃতপিন্ডটা লইয়া যা তবুও ওর নামে কিছু বলিস না । (সোহাগ)
:-আরে আমি কি বললাম আমি বলছি ওর সাথে একটু কথা বলবো । (আমি)
:-কেনো ।
:-ওইযে ওর সাথে সবসময় ঘুরে না কি নাম যেনো হ্যা রিমা ওর বেপারে । (আমি)
:-ওহ্ এই কথা আমি তো ভাবছিলাম । আচ্ছা কালকে বিকালে নদীর পাড়ে চলে আসিস । (সোহাগ)
:-হুমম তা তো ভাববাই আচ্ছা আসি কালকে বিকালে দেখা হচ্ছে । (আমি)
সোহাগের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসার দিকে রওনা দিলাম ।
এই যা এতো কথা বললাম এখনো তো পরিচয়টাই দেওয়া হলো না । যাই হোক এতোক্ষনে বুঝে গেছেন যে আমার নাম পারভেজ । তবে আর একটা নামও আছে মিঃ বাঁদর... পারভেজ নামে যে কয়জন চেনে মিঃ বাঁদর বললে তার থেকে দশগুন বেশি চিনে ।
যাই হোক কথা বলতে বলতে বাসায় চলে আসছি ।
:-আম্মু খেতে দাও ক্ষুদা লাগছে । (আমি)
:-আইছে এতোক্ষন শান্তিতে ছিলাম । (আম্মু)
:-কেনো আম্মু কে আসছে যার জন্য তোমার শান্তিতে থাকাটা নষ্ট হয়ে গেলো । (আমি)
;-কে আবার বাঁদর । (আম্মু)
:-বাঁদর কই আমি তো দেখতে পারছি না । (আমি)
:-উফ একটু চুপ করবি । (আম্মু)
:-আমি আবার কি বললাম । (আমি)
:-জানি তোর সাথে কথায় পারবোনা । (আম্মু)
:-তাহলে কথা বলতে আসছো কেনো ক্ষুদা লাগছে খেতে দাও । (আমি)
:-হুমম দিচ্ছি । তোর রেজাল্টের কি খবর । (আম্মু)
:-হুমম ভালো ফাস্ট হয়ছি । (আমি)
:-মিথ্যা কথা বলা ভালো না বুঝছোস । সারাদিন বাঁদরের মতো ঘুরে বেড়ানো আমি নিশ্চিত তুই ফেল করছিস । (আম্মু)
আল্লাহ্ এ আমি কই আছি আমার আম্মু আমার কথায় বিশ্বাস করছে না ।
:-যাই হোক আমি এখন ভার্সিটিতে ভর্তি হবো । (আমি)
:-কোথায় ।
:-কোথায় আবার আমাদের এখানেই । (আমি)
:-না তা হবে না তুই ঢাকায় ভার্তি হবি । (আম্মু)
:-কেনো কেনো এখানে হলে সমস্যা কোথায় । (আমি)
:-না তোর মতো বাঁদরকে এখানে রাখা যাবে না । (আম্মু)
:-আম্মু তুমি আমাকে তাড়িয়ে দিচ্ছো । আজকে বাবা আসুক বলবো । (আমি)
:-তোর বাবাই বলছে তুই কালকেই ঢাকা চলে যাবি । (আম্মু)
:-কিহ্ কালকে । (আমি)
:-হুমম ।
:-তা ওখানে গিয়ে থাকবো কোথায় ।(আমি)
:-সেটা তুই ব্যবস্থা করবি এখন তুই ছোট না বুঝলি । (আম্মু)
:-আম্মু ঢাকায় না তোমার খালাতো ভাই থাকে মানে আমার খালতো মামা (আমি)
:-হুমম তো ।
:-তো আমি সেই মামার বাসায় থাকবো ঢাকা কোথায় যেনো থাকে । (আমি)
:-না না আমি বলতে পারবো না কারণ আমি আর তোর ব্যপারে কোনো কথা শুনতে চাই না । আমি জানি ওখানে থাকলে তুই কোনো না কোনো একটা ঘটনা ঘটাবি । (আম্মু)
:-আমি কিছুই করবো না প্রমিস । (আমি)
:-রাখ তোর প্রমিস বাসা ভাড়া নিয়ে থাকবি দরকার হলে মাসে মাসে টাকা পাঠিয়ে দিবো । (আম্মু)
:-কিন্তু...
:-আর কোনো কিন্তু নেই তাড়াতাড়ি খেয়ে উঠে যা কার কার সাথে দেখা করবি করে আয় তোর জামা কাপড় সব গুছিয়ে রেখেছি কাল সকাল ৯ টায় তোর বাস । (আম্মু)
:-কি এতো সকালে । (আমি)
:-হুমম ।
বুঝলাম আমাকে বাড়ি থেকে বের করার জন্য উঠে পরে লাগছে । খাবার খেয়ে বাইরে চলে গেলাম । আপনারা হয়তো ভাবছে আমার আম্মু এমন কেনো আসলে সে আমাকে খুবই ভালোবাসে কিন্তু আমার বাঁদরামি সহ্য করতে পারেনা সেই জন্য এইসব আয়োজন । বিকালটায় একটু বন্ধুদের সাথে ঘোরাঘুরি করে বাসায় এসে দিলাম এক ঘুম ।
:-ওই ওঠ ।
:- কি হয়েছে ডাকছো কেনো । (আমি)
:-তাড়াতাড়ি ওঠ ৭ টা বাজে । (আম্মু)
:-কি হয়েছে আর একটু ঘুমাতে দাওনা । (আমি)
:-ওঠ নাকি পানি মারবো । (আম্মু)
:-হুমম উঠছি । (আমি)
বিছানা থেকে উঠে পড়লাম । ভাবছি কলেজ বন্ধ থাকলে তো আম্মু এতো তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ডাকে না তাহলে আজকে কেনো । ওহ্ মনে পড়ছে আমাকে ঢাকা পাঠানোর জন্য যে তারা উঠে পড়ে লাগছে । আমারও যাওয়ার ইচ্ছা নাই । তাই বাথরুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে গোসল করতে করতে এক ঘন্টা লাগায় দিচ্ছি । তারপর খাবার টেবিলে বসে একটা দুইটা করে ভাত খাচ্ছি সময়টা পার করার জন্য ।
:-কিরে খাচ্ছিস না কেনো বাসের আর মাত্র আধা ঘন্টা আছে । (আম্মু)
:-হুমম খাচ্ছি তো । (আমি)
:-থাক তোকে আর খেতে হবে না উঠে পর । (আম্মু)
কি আর করার ভাতের প্লেটটা নিয়া নিছে । বুঝছি আমার আর এ বাড়িতে থাকা হচ্ছে না । শালার কেনো যে পরিক্ষায় পাশ করলাম । ফেল করলে