অতলে অন্তরীণ – ১৮

একুশ জুন, মঙ্গলবার

ঙর সঙ্গে চোখাচোখি হয়েছে একজনের। ঙ গিয়েছিলেন একটি অনুষ্ঠানে

একুশ জুন, মঙ্গলবার

 

ঙর সঙ্গে চোখাচোখি হয়েছে একজনের। ঙ গিয়েছিলেন একটি অনুষ্ঠানে যেখানে শিল্পীরা মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে একটি আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলেন। জ নিজে একজন শিল্পী। শিল্পীর চোখ বোঝে ঙর চোখ দুটোয় উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, শঙ্কা। ঙর চোখ যেন কিছু খুঁজছেও, কাউকে খুঁজছে। জ ও তাকিয়ে থাকেন ঙ র দিকে। ঙর চোখ দুটো চারদিকে ঘুরে ঘুরে জ র চোখে গিয়ে স্থির হয়। আবার দুজনের চোখ চারদিকে ঘুরে এসে স্থির হয় দুজনের চোখে। সেই চারচোখে একটি ভাষা আছে। ভাষাগুলো দুজনই পড়তে চেষ্টা করেন। পড়তে পড়তে দুজন এগোতে থাকেন পরস্পরের দিকে। কাছে এসে খুব হালকা দুএকটি কথা শুরু হয় এভাবে।

 

–কেমন আছেন?

 

–এখন কি আর ভাল থাকার কোনও অবস্থা আছে!

 

–ভাবাও যায় না এইসব হচ্ছে দেশে। প্রতিরোধ ছাড়া আর উপায় নেই।

 

–নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই।

 

জ বোঝেন ঙর ঠিক মন নেই এই প্রতিরোধের আন্দোলনে। ঙ কিছু নিয়ে গভীর চিন্তা করছেন।

 

জ হঠাৎ বলেন, আমি কি কোনও রকম সাহায্য করতে পারি আপনাকে?

 

ঙ চমকে ওঠেন, জিজ্ঞেস করেন, কি রকম সাহায্য?

 

–যে কোনও সাহায্যই। আমি পারব করতে। জ ধীরে গম্ভীর কণ্ঠে ইতি উতি তাকিয়ে বলেন।

 

–কি পারবেন?

 

–আপনার যে সাহায্যটা এখন দরকার সেটা আমি করতে পারব।

 

–আমার যে কোনও সাহায্য দরকার তা কি করে বুঝলেন?

 

–আমি অনুমান করছি।

 

–কি রকম শুনি।

 

ঙ আর জ এগিয়ে যেতে থাকেন মানুষের ভিড় থেকে দূরে..

 

–আপনার কি কোনও নিরাপদ কোনও জায়গা দরকার?

 

–নিরাপদ জায়গা?

 

–হ্যাঁ নিরাপদ জায়গা। যদি দরকার হয় তাহলে আমাকে জানাবেন। আর একটি কথা, আমাকে বিশ্বাস করবেন।

 

জ ঙর হাতে তাঁর টেলিফোন নম্বর লেখা একটি কাগজ দিয়ে ভিড়ে মিশে যান।

 

আশ্চর্য এই জ। জ আমার চেনা। ঙ আমার চেনা। কিন্তু জর সঙ্গে কোনওদিন ঙকে নিয়ে, অথবা ঙর সঙ্গে জ কে নিয়ে কোনও কথা আমার কোনওদিন হয়নি। জ এবং ঙ কারও জানার কথা নয় যে দুজনই আমার চেনা বা পরিচিত।

 

ঙ এরপর জর সঙ্গে কথা বলে নিরাপদ জায়গাটির সন্ধান পান। এরপর গভীর রাতে, হঠাৎ, এমন কী আমাকেও বলা হয় না সেটি যে আজ রাতেই, আমার মুখ মাথা, গা হাত পা ঢেকে গাড়িতে উঠতে হয়, গাড়িতে ওঠার সময় কারও যদি চোখ পড়ে আমার দিকে, ভেবে নেবে এবাড়ির কোনও পর্দানসীন বৃদ্ধা (ঙর মা ) কে বুঝি হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে অথবা বৃদ্ধা তাঁর কন্যার বাড়িতে নাতনির অসুখ দেখতে যাচ্ছেন। গাড়ির পেছনে আমাকে শুয়ে পড়তে হয় কুকুর কুণ্ডুলি হয়ে, আমার শরীরখানা ঢেকে রাখা হয় হাবিজাবি জিনিস দিয়ে। গাড়ি কোথায় যাচ্ছে, কোন দিকে — আমার সাধ্য নেই অনুমান করি। যখন থামে, আমাকে দ্রুত নেমে আসতে হয়। ক আর ঙ আমার দু পাশে এমন ভাবে হাঁটেন যেন আমি আড়ালে পড়ে থাকি। কেউ নেই সামনে আমাদের দিকে নজর দেওয়ার। সামনে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে আছেন ঝ। এটি ঝর বাড়ি। ঝ আমাদের অপেক্ষায় বাড়ির সদর দরজার কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন


Rx Munna

447 Blog des postes

commentaires