"আমরা মোটামুটি সবাই সাইন্স নিলাম দিব্য কেন নিল না। আলিয়া তুই কী কিছু জানিস??" আকাশ জিজ্ঞেস করে আলিয়াকে...
"আরে!! আকাশ ;আজ পর্যন্ত কোনো দিন দিব্য কোনো কিছু আমাদের জানিয়েছে; জানিস না কেমন কেমন ছেলে ও!! নিজের ফর্মে থাকে সর্বদা।""
"ওই তো দিব্য আসছে ওকেই জিজ্ঞেস কর...." আলিয়ার কথায় সবাই পিছন ফিরে তাকায়।
পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি উচ্চতা গায়ের রং বেশ ফর্সা সুন্দর পুরুষালি চেহারার একজন ছেলে হাসি মুখে এগিয়ে আসছে ওদের দিকে ,দিব্য অর্থাৎ দিব্যায়ন চ্যাটার্জি। স্কুলের প্রতিটা মেয়ের ক্রাশ। বাবা বড়ো বিজনেস ম্যান টাকার অভাব দূর দুরান্তে নেই । ছোট থেকে নিজের মর্জির মালিক ও। নিজে যা ঠিক করে সেটাই করে কোনোকিছু তে বিশেষ পরোয়া করা ওর ধাঁচে নেই। বাবা মা অবশ্য ওর মতোন করেই ওকে ছেড়ে দিয়েছে । তা বলে বাবা মা যে ওর প্রতি দায়বদ্ধ নয় এটা বলা ভীষণ-ই ভুল হবে।
"কীরে তোরা এখানে ডাকলি কেন স্কুল তো দুদিন পর স্টার্ট সো দেখা হতো তখন.." দিব্য প্রত্যেকের দিকে তাকায়।
"আরে ব্রো চিল.. তোর সাথে একটা কথা ছিল তাই ভাবলাম সবাই মিট করি।" সাগ্নিক বেশ হাসি মুখেই উত্তর দেয়।।
"দিব্য তুই হঠাৎ উল্টো ট্রাকে হাঁটছিস কেন বলতো!! এমন তো কথা ছিল না আমাদের বস্".... আকাশ বেশ সিরিয়াস ভাবে বললো...
"ও আচ্ছা! তোরা আমার সাবজেক্ট সিলেকশন নিয়ে বলছিস। আমি কেন সাইন্স নেয়নি। আসলে কী জানিস তো ভাইলোক আর্টস-এ এই বছরে কিছু হেব্বি মেয়ে এসেছে আর তোরা জানিস মেয়ে যেখানে দিব্য সেখানে দ্যাটস্ হোয়াই আই চুজ আর্টস;" মুখে বেশ চওড়া হাসি এনে বললো দিব্য কথাটা...
"এ ভাই!! সিরিয়াসলি! ! ইশ তুই আগে বলবি তো তাহলে আমিও আর্টস নিতাম। এখন সাবজেক্ট চেঞ্জ করবো কী ভাবে!" সাগ্নিক বেশ চিন্তিত এবার; আফসোসের সুর ওর গলায় স্পষ্ট ।।
"দিব্য প্লিজ ফাজলামি করিস না। মেয়ের জন্য তুই আর্টস নিবি দ্যাটস্ ইমপসিবেল। হোয়াট ইস দ্য অ্যকচুয়াল রিজন প্লিজ টেল আস। আই মিন তোর তো টাকার অভাব নেই কিংবা তুই পড়াশোনায় ও খারাপ নোস মানে যথেষ্ঠ ইনটেলিজেন্ট তুই , , তাহলে কেন??? "আকাশ সিরিয়াসনেসের মাত্রা একটু চড়িয়েছে দিব্য এর প্রতি।।
"লুক আকাশ আর্টস যে লোকে খরচা কম সেই জন্যে পড়ে বা আর্টস পড়তে গেলে যে একদম ব্রেইন লাগে না দিস ইস নট ট্রু। আই মিন মেন স্ট্রিম যতটা ইমপটেন্ট এন্ড ভ্যালুয়েবেল ঠিক ততোটাই আর্টস এন্ড কমার্স ইজ ইক্যুয়াল ভ্যালুয়েবেল । তবে আমি আর্টস নিয়েছি একটা অন্য কারনে। একচ্যুয়ালি আমি ঠিক করেছিলাম জিওগ্রাফি নেব, বলতে পারিস জিওগ্রাফির উপর একটা টান রয়েছে ছোট থেকে। তবে বায়ো সাইন্স ও নিতে পারতাম,, বাট দেন মনে হল অনলি টু ইয়ারর্সের ব্যাপার আর্টস টা থাকুক যদি পরে ইচ্ছা না করে অন্য অপসানস্ তো আছেই। আর তোরা এত চিন্তিত কেন আমি স্ট্রিম চেঞ্জ করেছি; ফ্রেন্ডশিপ এন্ড স্কুল সেম-ই আছে ব্রো"। দিব্য হাসি মুখে বলে কথাগুলো ।।
"সেটাই তো!! আমি কখন থেকে সবাই কে এটাই বোঝাচ্ছি,, দিব্য আমাদের সাথেই আছে বাট কেউ বুঝতেই চাইছে না। " বেশ এক্সসাইটেট হয়ে সাগ্নিক বললো.....
আকাশ সাগ্নিক এর মাথায় একটা চাটি মারে। "কী বে!! খালি ঠপ্ ,, তুই কখন আমাদের এইসব কথা বললি....."
"আরে চিল ব্রো! ! কথাগুলো আমি বলতে চাইছিলাম বাট পেটে এসে আটকে ছিল মুখ পর্যন্ত আসেনি। চ না ভাইলোক, , সেই কখন এসেছি এখনো কিছু খাইনি। এটলিস্ট একটা স্যান্ডুইজ তো খাওয়ায় যায়!!! "
"এই শুরু হল সাগ্নিকের হাগুরেপনা। চল সবাই কিছু অর্ডার দেই।" আকাশের কথায় সবাই হাসতে হাসতে ফুট কোর্ডের দিকে এগিয়ে গেল।।
................................
পেরিয়ে গেছে দুটো দিন।। আজ থেকে ওদের নতুন ক্লাস স্টার্ট হচ্ছে সবাই-ই এই নিয়ে খুব উৎসাহিত। ইলেভেন এ বছর আবার নতুন কিছু স্টুডেন্ট ও আসবে ,, সাগ্নিক এ নিয়ে বেশ আনন্দিত। যদি এ বছর কোন গফ তার জুটে যায়,, লাইফে তার সব আছে তবু যেন গার্লফ্রেন্ড ছাড়া লাইফটা ঠিক জমে না। যাইহোক স্কুলের গেটের সামনে এই সব ভাবতে ভাবতে সে ওয়েট করছে তার গ্যাং-এর জন্য। চার বন্ধুর এই গ্যাং টা ভীষণ-ই ফেমাস। শুধু মাত্র বন্ধুত্বের জন্য তা নয় সবাই ওদের আর একটা কারণেও ওদের সমীহ করে সেটা হল দিব্য -এর বাবা বড়োলোক প্লাস একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ার সুবাদে। একে একে সবার সাথে সবার দেখা হয়। "দিব্য দিস ইস সো ব্যাড! আমি তোর সাথে একসাথে ক্লাসও করতে পারবো না। " আলিয়া বেশ ন্যাকা সুরে বলে...
"কাম অন আলিয়া ! বলিস তো তোদের সাথে তোদের ক্লাস রুমে যাই!! দেন...." আলিয়ার গালটা টিপে দিয়ে দিব্য উত্তর করে। দিব্য-এর এই ফ্লার্ট করা স্বভাব বেশ পুরোনো। শুধু আলিয়া কেন ক্লাসে যারা যারা ওর প্রতি ফিদা ওদের সবাইকে ও খেলায়। বন্ধুদের মধ্যে সাগ্নিক একই গোছের শুধু আকাশ একটু ডিফরেন্ট। আকাশ মেয়েদের যথেষ্ট সমীহ করে চলে। ও দিব্য সাগ্নিক-কে কতবার বারন ও করেছে বাট ওরা শুনলে তো। আলিয়া মেয়ে বলেই কিছু বলে না। এখন জাস্ট সবাই কে সবার মতো থাকতে দেয় ও!! তবে এটাও ঠিক এই গুলোর কারনে ওদের বন্ধুত্বে কোন এফেক্ট পরে না। আফটার অল প্রত্যেকের কাছেই ফ্রেন্ডশিপটা ভীষণ-ই ইমপটেন্ট।। যাইহোক এবার সবাই নিজেদের ক্লাসের দিকে এগোয়। তিনজন একই রুমে আর দিব্য আলাদা রুমের দিকে পা বাড়ায়...
.......................
ক্লাসে ঢুকে দিব্য বেশির ভাগ চেনা পরিচিত বন্ধুদের সাথে মেতে ওঠে কিছু অচেনা ক্লাসমেট এর সাথেও আলাপ করতে ওর দু-মিনিট লাগে না। যথা সময়ে ক্লাসে স্যার আসেন , সবার সাথে কিছুক্ষণ ইন্ট্রডিয়ুস করতে থাকেন এমন সময়ে ক্লাসে একজন মেয়ে এসে উপস্থিত হয়-- "এক্সকিউস মি স্যার মে আই কামিং?? " মেয়েটি বেশ আস্তেই বলে কথাটা। বেশ কয়েকজন শুনতে পেয়ে তাকায় গেট এর দিকে দিব্য অবশ্য কিছু ছেলের অনুসরন করা দৃষ্টির প্রতি তাকিয়ে সেও দৃষ্টি নিক্ষেপ করে গেট এর প্রতি।
একটা মেয়ে রোগা ছিপছিপে শ্যামলা গায়ের রং হাইট ও খুব বেশি নয়, প্রপারলি স্কুল ড্রেসে দাঁড়িয়ে আছে । মেয়েটির প্রতি আকর্ষণ হওয়ার কোন বাহ্যিক গুন-ই নেই , শুধু চোখ দুটো আর মুখের হাসিটা ছাড়া । বেশ বড়ো টানা টানা চোখ আলাদা করে প্রত্যেকের চোখে পড়ার-ই মতো। "কাম অন দিব্য এই মেয়েটির দিকে তাকিয়ে থাকার মতো ওর মধ্যে কোনো কোয়ালিটি নেই, !! " নিজেকে বুঝিয়ে নিজের মাথায় চাটি মেরে দিব্য অন্যদিকে মুখ ঘোরায়।।
স্যার এর পারমিশন পেয়ে মেয়েটি এদিক ওদিক তাকিয়ে শেষে দিব্য -এর পাশে ফাঁকা জায়গায় এসে বসে। মেয়েটি পাশে বসার সাথে সাথেই দিব্য -এর নাকে একটা সুন্দর গন্ধ ধাক্কা মারে। কোন পারফিউমের এত সুন্দর গন্ধ সেটা দিব্য বুঝতে পারছে না। আজ পর্যন্ত কম মেয়ের সাথে তো ফ্লার্ট করেনি সে কিন্তু কোনদিন এমন কোন গন্ধ পায়নি তো!! সৌজন্যের খাতিরে মেয়েটির দিকে হাত বাড়ায়-- "হাই আমি দিব্য আই মিন দিব্যায়ন চ্যাটার্জি! সবাই অবশ্য দিব্য নামেই চেনে। আর ইউ নিউলি অ্যাডমিটেট? ? "
দিব্য -এর এত গুলো কথায় মেয়েটি একটু হেসে শুধু নিজের নাম টা বলে--- "স্নিগ্ধা " এটুকু বলার পরই মেয়েটি সামনে স্যারের দিকে তাকায়।।
দিব্য বেশ কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বাড়ানো হাতটা সরিয়ে নেয় ! বাব্বা!! ফার্স্ট ডে তেই অ্যাটিটিউট!! তাও আবার দিব্যায়ন চ্যাটার্জি কে।। দেখতে হচ্ছে তো ব্যাপারটা .........
চলবে....
সকলকে শুভ বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়ে আবারো নতুন কিছু শুরু করলাম।। সকলকে আবারো পাশে পেলে খুবই ভালো লাগবে।।
Md Mahfuz
38 Блог сообщений