বিড়ালের ইতিহাস

বিড়াল খুবই সুন্দর প্রাণী।

বিড়ালের ইতিহাস

বিড়াল মানুষের সাথে হাজার হাজার বছর ধরে একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে এসেছে। বিড়ালের ইতিহাসকে আমরা মূলত দুই ভাগে ভাগ করতে পারি—বন্য বিড়ালদের গৃহপালিত করা এবং বিড়ালদের গৃহপালিত প্রাণী হিসেবে বিবর্তন।

বিড়ালের গৃহপালিত হওয়া:

প্রায় ৯,০০০ বছর আগে বিড়াল প্রথম গৃহপালিত হয় বলে ধারণা করা হয়। বিড়ালের গৃহপালনের প্রাথমিক প্রমাণ মেলে প্রাচীন মিশরে। মিশরীয়রা বিড়ালকে খুব পবিত্র এবং সম্মানিত প্রাণী হিসেবে গণ্য করত। বিড়াল ফসলের শস্য রক্ষা করার জন্য ইঁদুর এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক প্রাণী খেয়ে কৃষকদের সহায়তা করত। এজন্য বিড়াল কৃষকদের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠে, এবং তারা বিড়ালকে তাদের ঘরে রাখতে শুরু করে।

 

মিশরের বিড়াল পূজা:

প্রাচীন মিশরে বিড়াল দেবতা হিসেবে পূজিত হতো। বিড়ালের সঙ্গে দেবী বাস্তেত-এর বিশেষ সম্পর্ক ছিল, যিনি ছিলেন মিশরের সুরক্ষা ও উর্বরতার দেবী। মিশরীয়রা বিশ্বাস করত, বিড়াল তাদের ঘর এবং ফসলকে মন্দ আত্মা থেকে রক্ষা করে। এজন্য মিশরে বিড়াল হত্যা করা ছিল শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

ইউরোপে বিড়ালের বিস্তার:

মিশর থেকে বিড়ালের বিস্তার ঘটে প্রাচীন গ্রিস, রোম, এবং পরবর্তী সময়ে ইউরোপের অন্যান্য অংশে। প্রাচীন রোমানরা বিড়ালকে পরিবারের প্রতীক হিসেবে দেখত, এবং বিড়ালকে ঘরে রাখতে শুরু করে। মধ্যযুগে, বিশেষ করে ১৩০০-১৫০০ খ্রিস্টাব্দের সময়, ইউরোপে বিড়ালের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি অনেকাংশে নেতিবাচক হয়ে ওঠে। বিড়ালকে মাঝে মাঝে জাদুবিদ্যার সঙ্গে যুক্ত করা হতো, বিশেষত কালো বিড়ালকে। তবে ধীরে ধীরে বিড়ালদের প্রতি মানুষের এই ভ্রান্ত ধারণা দূর হয়, এবং তারা আবারও মানুষের পোষ্য প্রাণী হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।


Asraful Mukhluqat

100 Blog postovi

Komentari